নীল ডোরার বাঘ
বাঘের চিতাচরিত্র নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ ছিল না। যা ভাবতাম তা
হলো,একটি নীল ডোরার বাঘ আমার সাথে খেলছে ভলিবল, হকি কিংবা
হা ডু ডু , আমার একে অপরকে হারাচ্ছি বার বার আর কিছুটা সূর্যস্মৃতি
আহরণ করে মাটিতে আঁকছি নখের দাগ। নরকের প্রতিচিহ্ন। অথবা অন্য
ভাবেও বলা যায়, আমরা তছনছ করছি মানুষের প্রিয় সুন্দরবন,বনের
আকাশ। বাঘটিকে আমি লাল চাদরে ঢেকে দিতে চেয়েছিলাম এজন্য,
কারণ প্রতিবেশী রক্তজবারা তাদের জবানিতে আমাকে জানিয়েছিল, তাদের
বেশ অসুবিধে হচ্ছে নীল ডোরাগুলোকে মেনে নিতে। বেদনার বংশী বাজিয়ে
যে রাখাল চরায় ধেনু ,তার বিরুদ্ধে তীর্থদুপুর ও করেছিল অভিযোগ – নীল
নক্ষত্র ও বাঘ খেকো মানুষগুলোর চির অবসান চেয়ে শিশুরাও লিখেছিল
পৃথক চিঠি ।
তাঁতের তাৎপর্য
তোমাকে সাজাবো সখী কয়েকটি ফুলের আলোয়
যে তরুর ডাল ছুঁয়ে স্থির থাকে সবগুলো পাখি
আর এই নদীসম মাতৃকা’রা নাম ধরে করে ডাকাডাকি
যে জলে আলোর খেলা, সারারাত মন জেগে রয় ।
বিনয়ে বিন্যস্ত চাঁদ এখানেও কতকাল আগে
রেখে গেছে পদছাপ, মানুষের, নিত্য ঋতুতে
কে বলে বিশ্বস্থ নয়, গ্রহতারা- মানব হৃদিতে
অনুগত হয়ে থাকে, ডাক পেলে বাহুর সংরাগে।
তোমাকে সাজাবো সখী, বুনে রাখা সর্ষেকুসুমে
শীর্ষ পথের কাছে চেয়ে নেবো গন্তব্য বিশাল
তাঁতের তাৎপর্য জানে চারপাশে সমাগত কাল
কিভাবে আগুন ডুবে বহুগামী সাদা সাদা মোমে।
আবার দাঁড়াও এসে এ ভূমিতে, বসন্তবিভায়
চেয়ে দ্যাখো হে মানবী, ছবিগুলো সরোদ বাজায় !
পঠন বিষয়ক পত্রাবলী
প্রকৃত পঠন আমার উদ্দেশ্য ছিলো না। তবুও আমাকে পড়তে হয়েছে। এক
জীবনে সবকিছুই পড়া হয় না। দেখে গেলেও তুষ্ট হয় না মন। তবু তাকিয়ে
থেকে আকাশ পড়েছি, পাহাড় পড়েছি,পড়েছি ঝরণার অসমান্তরাল
ঢেউসূত্র। কোথা থেকে ঝড় এসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে খড়ের স্তুপ। নিজেকে খড়ের
চেয়েও তুচ্ছ মনে হয়েছে তখন। ঝড়, খড় কে আলিংগন করেছে। আমাকে করেনি।
করলে আমিও উড়তে পারতাম। কিংবা নদীতীরে দাঁড়িয়ে হতে পারতাম কোনো
দূরগামি মাঝির গানের মুগ্ধ শ্রোতা। জানি,আমাদের শ্রোতার সংখ্যা কম। বক্তা
বেশি। সবাই বলতে চায়। অথচ না শুনলে বলা যায় না। যারা অন্ধ তারা
না দেখেও আঁকতে পারে অনেক সুদৃশ্য চিত্রাবলি। আমাদের চোখ আছে । তারপরও
আমরা না দেখার ভান করি। অনেক রঙের সমষ্টি মিলিয়ে রেখে যাই আমাদের
প্রতারণার রঙ। পথটা প্রশস্থই ছিল। কিছুটা আলো পেলে পরিপুষ্ট নদীর স্রোতে
আমরাও দেখতে পারতাম নিজেদের মুখ।হায়!
হয়নি সেই সময়ও এই জনমে !
রেখে যেতে পারিনি একগুচ্ছ সবুজ শালুক। #