//মায়ামৃগের শেষরায়
জমজম পানি রেখেছি দুহাতে বারোমাস
পেলেই তোমার তৃষ্ণা তা দিয়ে মেটাবো
স্বর্গ মর্ত পাতাল তোমার খোঁজে যাবো
বাহক আমার স্বরস্বতির রাজহাঁস –
নম্বরহীন বেশ কয়েদি যতই থাক
কংকাবতির মতই নেব তা খোঁজ করে
ত্রিবেণীর জলে স্নান সমাপনে তুলি ঘরে
ব্রতচারিণীর শোননি এই হাকডাক –
নিঃসন্দেহে নায়ক – ফুটানির গরীমায়
বনপলাশীর পদাবলিতে কেটেছ সুর
তিন পৃথিবী করেছ প্রিয় অন্তঃপুর
নায়িকা আমিও – দেখি গরিমা যায় কোথায় –
প্রেম নিয়ে খেলা! কাঁদাও আমাকে! আল্লাদ !
সদানন্দের খেলাটা আমার বোঝ নাই !
ভরা ভাদরে ভিজে ভিজে আমি তোমাকে চাই
তোমার বিরহে হৃদপ্রাণ হয় বরবাদ –
এত বোঝ শুধু প্রেমই বোঝনা ! সন্ন্যাসী !
শুকসারিদের গল্পে শুনেছি আর কিছু
মায়ামৃগ হয়ে সেই কারনে নেই পিছু –
অকারণ নয় বাড়াবাড়ি শোন ভালবাসি –
ভালবাসাতে ছাড়াছাড়ি নেই যাবে কোথায় ?
মারামারি হবে ক্ষতি কি তবু তোমাকে চাই
স্বর্গ মর্ত পাতাল ঘুরে যেখানে পাই –
তনু দেহ মন দিয়েছে এই শেষের রায় ।।
৩১শে জুলাই, ২০১৭
//মননে ভাঙ্গা চাঁদ
প্রেমের আগর হয়ে সুগন্ধি বয়ে বয়ে
দেখোনা আমি কী যে করছি
কবরী সাজানো মিছে আনবাড়ি গেল কি সে!
অভিমানে শুধু যে জ্বলছি –
তারপর একি খেলা নিদারুণ অবহেলা
বাড়াবাড়ি বলি এর নাম
পথ পানে থাকি চেয়ে নিলাজ বেহায়া মেয়ে
দেয়না সে এর কোন দাম –
আসুক বোঝাবো মজা আজকেই হবে সোজা
সুরটাকে দেব আমি কেটে
আবার তুলতে গান নিশি হবে অবসান
বুঝবে সে জ্বালা কিসে মেটে –
চেয়ে দেখ ভাঙ্গা চাঁদ ভেঙ্গে ভেঙ্গে গড়ে ফাঁদ
পানিতে আগুন জ্বেলে হাসে
লাজে আমি মরে যাই এখন যদিও পাই
খুঁজবে কয়দিন ক’মাসে –
ছেড়ে আসি বাড়িঘর এতদেরি তারপর
কিভাবে যে সময়টা যায়
যাদুকর জানে যাদু আমি চোর সে যে সাধু
ছোঁয়াতেই রাগেরা পালায় –
আজ হবো নিষ্ঠুর দেখি যায় কতদূর
ভালবাসা বোঝাবোই শোন
দেখে নিও সকলেই নিস্তার আজ নেই
কানপড়া শোনবোনা কোন ।।
২৩শে, জুলাই,২০১৭
// ঘাস ফুল
(একটি গীতি কবিতা)
হায় সাবিনা হায়
ডিমের কুসুম ফাটলো বলেই জীবন যে তোর যায়
হায় সাবিনা হায়
পোয়াতি বিবির ছয় মাস কাটে রুচি কি আছে খাওয়ায় -!
হায় সাবিনা হায়
গরম গরম খুন্তির ছেকা মিটালো কি সেই দায় -?
হায় সাবিনা হায়
চোখ দুটো তোর আছে না গেছে জানার কি উপায় –
হায় সাবিনা হায়
তোদের মতন সব শিশুদের বিচার কেঁদে বেড়ায়
হায় সাবিনা হায়
হায়রে হায়-
হায় সাবিনা হায়
ঈদের আগেই চোখে পানি ছিল ছবির একটি ভাষায়
হায় সাবিনা হায়
দামি পরিবার খেতে বসেছে দামের রেঁস্তোরায়
হায় সাবিনা হায়
তোর মত এক শিশু ব্যাগ হাতে দাঁড়ানো যে দরজায়
হায় সাবিনা হায়
সন্তান সহ গোগ্রাসে সব হাসি আনন্দে খায়
হায় সাবিনা হায়
এসব খাবার তোদের পেটে যে হজম বিঘ্ন ঘটায়
হায় সাবিনা হায়
দেখে যা আর বোঝা নিয়ে দাঁড়া দূরে ঐ দরজায়
হায় সাবিনা হায়
তোদের মতন সব শিশুদের বিচার কেঁদে বেড়ায়
হায় সাবিনা হায়
হায়রে হায় –
হায় সাবিনা হায়
সাহেব বেগম বাজার শেষের খুশির আটখানায়
হায় সাবিনা হায়
মালামাল নিয়ে উঠেছেন ঠেলে নয়া এক রিকশায়
হায় সাবিনা হায়
গোলামের পা রিকশার পিছে ডাটি ধরে সে যে দাঁড়ায়
হায় সাবিনা হায়
সাহেব বিবির উপর টেক্কা তোরা তা পাবি কোথায়
হায় সাবিনা হায়
তোদের মতন সব শিশুদের বিচার কেঁদে বেড়ায়
হায় সাবিনা হায়
হায়রে হায় –
হায় সাবিনা হায়
কতজন যে পথশিশু আর পথকলি খুঁজে বেড়ায়
হায় সাবিনা হায়
ঘাসফুলগুলো পিষে মারে তারা তাদের জুতোর তলায়
হায় সাবিনা হায়
এনজিও খুলে ইস্কুল গড়ে উপকারভোগি বানায়
হায় সাবিনা হায়
উপকার মেলে কতটুকু কার কাটে দিন বাহানায়
হায় সাবিনা হায়
আরতো পারিনা ভাসছে দুচোখ বানে আর বন্যায়
হায় সাবিনা হায়
তোদের মতন সব শিশুদের বিচার কেঁদে বেড়ায়
হায় সাবিনা হায়
হায়রে হায় –
ও সাবিনা শেষ কথা শোন আমাদের এই দেশে
শোষনবিহীন সমাজ দেখিস আসবে হেসে হেসে
তুই আমি সব এক কাতারে চলবোরে বুলবুল
দেখবি তখন পায়ের তলায় নেই কোন ঘাসফুল ।।
১৭ই জুলাই,২০১৭
//অবনীর স্বর্গ
বলতো তোরা কোন কারণে চোখেতে জল ঝরাস
এ জগতের সব অমিয়, গরল বিষে ভরাস-!
কেন এত মারামারি
জাতে জাতে দা-কাটারি
প্রেম না দিয়ে কেন এত ঘৃণাকে তুই ছড়াস
রক্ত সবার লাল আহারে যে কাপড়ই পরাস।।
কোন কারণে মেহমান তুই ভবেরি সংসারে
দম ফুরালে ফেরত গিয়ে বলবি কি বল তারে-!
প্রতিযোগী কেন কিসে
দিশেহারা কিসে দিশে-
খালি হাতেই আসলি আবার যাবি যখন পারে
থাকবে যে তোর শূন্য হাত সেই অন্ধকারে -।।
মখলুকাতের সেরা যে তুই কেন ভুলিস বল
নিজের স্বার্থে ডাকিস কেন এত অমঙ্গল –
এত সুখের অসুখ
ভরবে কি তোর বুক-
যা আছে তা যথেষ্ঠ ভাব করিস নে আর ছল
অবনিতে ফুটে উঠুক স্বর্গের ফুল ও ফল -।।
//জয় চির সুন্দর
সোনার তরীতে এমন আগুন বলতো লাগালো কে?
পৃথিবীর সব অমিয় এমন গরল বানালো কে ?
সিরিয়ায় কাঁদে শিশু সোনামনি
আফগান হলো যুদ্ধের খনি
ধর্ষিতা বোন চিৎকার করে বলছে-” বাংলাদেশ –
বিশ্বব্যাপী এত অনাচার কবে হবে বলো শেষ -“?
উন্নত বিশ্বে কুকুর বিড়াল যে খাবার নষ্ট করে,
তৃতীয় বিশ্বে সব মানুষের তাই দিয়ে পেট ভরে –
তারপরও বলো কেন এত খেলা
প্যালেস্টাইন কাঁদে সারা বেলা
ইথোউপিয়া কঙ্গো অথবা আফ্রিকা মহাদেশে
সভ্যতা রয়েছে এখনো তিমিরে সূর্য উঠেনি হেসে ।
দুনিয়াতে শুধু দেখি জাত পাত
দেখা হয় নাই সাহায্য হাত
অন্ন বস্ত্র চিকিৎসা আশ্রয় শিক্ষার অধিকার
সীমানার মাঝে সীমাবদ্ধ , শুধু যে অঙ্গীকার ।
রাজনীতি বলো কারে নিয়ে চলে
জনতার কথা কোথায় কে বলে
দল বেঁধে চলো একসাথে বলি জয় চির সুন্দর –
বাসযোগ্য হবেই পৃথিবী রবে না ভয় ডর ।
১৭জুন ২০১৭