বিডি মেট্রোনিউজ ॥ দেশেই মোবাইল ফোন তৈরির কারখানা করতে যাচ্ছে ওয়ালটন। মোবাইল ফোন সেট তৈরির কাঁচামাল আমদানিতে সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা পেলে ২০১৭ সালের মধ্যে দেশেই মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরি করতে আগ্রহী ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে দেড় শতাধিক প্রকৌশলী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা মোবাইল সেটের মানোন্নয়ন ও গবেষণার কাজ করছেন।
শনিবার গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক কারখানা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী ওয়ালটন মোবাইল ডিস্ট্রিবিউটর কংগ্রেসে ওয়ালটন গ্রুপের পরিচালক এসএম মঞ্জুরুল আলম অভি এই পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘মোবাইল সেট বিক্রিতে ইতোমধ্যে বছরে গড়ে ২০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে ওয়ালটন। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে সামনে এগিয়ে নিতে ওয়ালটন দেশের ভেতরেই মিড ও হাই রেঞ্জের মোবাইলফোন সেট ও ট্যাব তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। এজন্য সবার আগে সরকারি নীতি সহায়তা প্রয়োজন।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে দেশ-বিদেশে ইতিহাস গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন।’
’চলো একসাথে ইতিহাস গড়ি’ স্লোগানে শুরু হওয়া এই কংগ্রেসে সারাদেশ থেকে ওয়ালটন মোবাইল ফোন বিভাগের ২৫টি জোনের ১৭০ জন ডিস্ট্রিবিউটর অংশ নেন। ডিস্ট্রিবিউটররা নিজেদের সৃজনশীল মেধা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশে-বিদেশে ওয়ালটন মোবাইলের বাজার সম্প্রসারণে আরো দৃঢ়ভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের চেয়ারম্যান এস এম নূরুল আলম রেজভী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এসএম শামসুল আলম, পরিচালক এসএম রেজাউল আলম, এসএম মঞ্জুরুল আলম অভি এবং তাহমিনা আফরোজ।
কংগ্রেসে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ও বিপণন বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রিজওয়ানা; পলিসি, এইচআরএম এবং এডমিন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এসএম জাহিদ হাসান, বিপণন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এমদাদুল হক সরকার, ফরেইন ট্রেড মনিটরিং বিভাগের নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম সরকার, পিআর অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর, অপারেটিভ ডিরেক্টর লে. কর্নেল(অব.) আব্দুল কাদের, ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
এসময় এসএম শামসুল আলম বলেন, ‘ওয়ালটনের উদ্দেশ্য শুধু ব্যবসা নয়, ওয়ালটন দেশ ও মানুষের সেবায়ও কাজ করছে। দিন দিন ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করছে।’ এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সব স্তরের কর্মকর্তা ও ডিস্ট্রিবিউটরদের সহযোগিতা চান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ফ্রিজ ও টেলিভিশনের মতো খুব শিগগিরই মোবাইল ফোন সেটের পেছনে লেখা থাকবে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’। এজন্য ওয়ালটন গ্রুপ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।’
ডিস্ট্রিবিউটরদের উদ্দেশে ইভা রিজওয়ানা বলেন, ‘কোম্পানির নিয়ম মেনে ওয়ালটনের স্মার্ট ফোন গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর দায়িত্ব আপনাদের। গ্রাহকর তাদের চাহিদা মাথায় রেখে ওয়ালটন পণ্য বাজারজাত করছে।’
গুণগত মানের জন্যই ওয়ালটন পণ্য দিগন্ত ছাড়িয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে এস এম জাহিদ হাসান বলেন, ‘একদল বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের নেতৃত্বে ওয়ালটন গ্রুপ ব্যাপক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। শুধু ভৌগোলিক স্বাধীনতায় নয়, আমরা অর্থনৈতিক স্বাধীনতার জন্য লড়ছি।’
ইলিয়াস কাঞ্চন তার বক্তৃতায় বলেন, ‘ওয়ালটন এখন কোন পণ্য নয়, ওয়ালটন একটি ব্র্যান্ড; যা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে। বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন বিশ্বময় জায়গা করে নিয়েছে।’ শুধু ব্যবসা নয়, ওয়ালটন দেশ গড়ার কাজও করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে ২০১৫ সালের শ্রেষ্ঠ পরিবেশক এবং শীতকালীন অফারের সেরাসহ ৪৩ জন পরিবেশককে ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিকে ডিস্ট্রিবিউটররা ওয়ালটন কারখানায় ফ্রিজ, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধররে হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের উৎপাদন ইউনিট ঘুরে দেখেন। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনব্যাপী এই কংগ্রেসের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।