মেট্রো নিউজ : ইরাকের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিজেএমসির পাট রফতানির ২০০ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হয়নি গত ২০ বছরে। দফায় দফায় ইরাক সফরে কর্মকর্তারা গচ্চা দিয়েছেন রাষ্ট্রের আরও কয়েক কোটি টাকা। অর্থ আদায়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টার পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতাও চালানো হয়েছে। কোনো প্রচেষ্টাতেই এখনও টাকা আদায় করা সম্ভব হয়নি।
দেড় যুগ ধরে যত প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে, সবই ব্যর্থ হয়েছে। কর্মকর্তারা আসা-যাওয়াই করেছেন, অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি আরও একটি লবিয়িস্ট ফার্ম টাকা আদায় করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ কারণে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ বাবদ নতুন করে আর একটি টাকাও ব্যয় করা সম্ভব নয়। অর্থ আদায় করে দেওয়ার পর কমিশন পাবে_ এ শর্তে কোনো লবিয়িস্ট ফার্ম কাজ করতে আগ্রহী হলে সরকার তাতে রাজি আছে।
জানা গেছে, গ্রেইন বোর্ড অব ইরাক ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) থেকে পাটের বস্তা আমদানির রস্তাব দেয়। বাকিতে পাট বিক্রিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রথমে আপত্তি করা হয়। পরে অর্থ পরিশোধে নিশ্চয়তা হিসেবে ইরাকের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংককে নিশ্চয়তা দেয়। এরপর ১৯৯৭ থেকে ‘৯৯ সাল পর্যন্ত তিন দফায় বিজেএমসি থেকে ৩৭ হাজার ৯৭৫ বেল পাটের বস্তা কেনে ইরাকের ওই প্রতিষ্ঠান। ২০০ কোটি টাকা মূল্যের ওই অর্থ তিন কিস্তিতে পরবর্তী দুই বছরে পরিশোধ করার কথা। এখন পর্যন্ত এক টাকাও পায়নি বাংলাদেশ।
অর্থ পরিশোধে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে ইরাকি কর্তৃপক্ষ। দফায় দফায় দুই দেশের সরকার পর্যায়ে আলোচনা চলতে থাকে। প্রায় প্রতি বছরই একবার দলবল নিয়ে ইরাক সফর করেন মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসির কর্মকর্তারা।
আরেক দেশ সুদানেও পাট রফতানির দেড় হাজার কোটি টাকা আটকে আছে। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ইরাক এবং সুদান থেকে অর্থ আদায় করার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, দুই দেশের সরকারই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের দোহাই দিয়ে টাকা ফেরত না দেওয়ার চেষ্টা করছে।
১৯৯২ সালে সুদানে বাকিতে পাট বিক্রি করা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা এখনও আদায় করা যায়নি। পাওনা টাকার বিনিময়ে সুদানে বন্ধ মিল অথবা সে দেশে পতিত জমি কেনার অভিনব প্রস্তাবও দেওয়া হয় সুদানের পক্ষ থেকে।