ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আলোকদিয়ায় যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ওই এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির কয়েকটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন টাওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া ওই গ্রামের বসতবাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা যমুনার ভাঙনের কবলে পড়েছে।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) এই বিষয়টি নিয়ে আলোকদিয়া গ্রামের বাসিন্দারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. জামাল হোসেন এ বিষয় নিয়ে গত ৮ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগপত্র ও মানববন্ধনে মো. জামাল হোসেন জানান, যমুনার আলোকদিয়া এলাকায় অসংখ্য বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে, স্থানীয়ভাবে যা তারখাম্বা নামে পরিচিত। ওই এলাকায় সরকারিভাবে কোনো বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। কিন্তু মানিকগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকবীর এন্টারপ্রাইজের মালিক আবুল বাসারের নেতৃত্বে একটি চক্র তারখাম্বার আশেপাশের এলাকায় লোড ড্রেজার বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। ফলে তারখাম্বাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি অভিযোগপত্রে আরও জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় আমাদের আবাদি জমি, বাড়ি-ঘরসহ মসজিদ, মাদ্রাসা ও রাস্তা যমুনার গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে। সেটি হলে আমরা সর্বশান্ত হয়ে পড়বো।
মো. জামাল হোসেন অভিযোগপত্রে অবিলম্বে আলোকদিয়া এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসকের প্রতি আবেদন জানান।
আলোকদিয়ার যমুনা নদীতে অবৈধ বালু কাটার বিষয়টি জানতে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর আমরা একটি অভিযান চালিয়েছিলাম। কিন্তু অভিযানের খবর আগে থেকে জানতে পেরে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরুতে আমরা আলোকদিয়ায় যমুনা নদীতে অভিযান চালিয়েছিলাম। ওই সময় বালু কাটার কাজে ব্যবহৃত তিনটি কাটার মেশিন জব্দ করা হয় এবং অবৈধভাবে বালু কাটার দায়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া তেওতা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বাদী হয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও জানান, যমুনার তীরবর্তী আলোকদিয়া এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযান স্থলে পৌঁছার আগেই অবৈধভাবে বালু কাটায় নিয়োজিত লোকজন পালিয়ে যায়। ফলে অপরাধীদের হাতেনাতে ধরা সম্ভব হয় না।