বিডি মেট্রোনিউজ, যশোর॥ বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে চলে গেল যশোরের গাড়িখানা সড়কে শত বছর ধরে বসবাসকারী ৪০ পরিবার।
শুক্রবারের দৃশ্য ছিল এ রকম, পরিবারগুলো তাদের ঘরবাড়ি খুলে ফেলছে, আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছে। একই সাথে পুলিশি পাহারায় চলছে পুলিশ ক্লাবের দেয়াল নির্মাণের কাজ।
১৯১০ সালে ১ দশমিক ২০ একর জমি সরকার থেকে বরাদ্দ নেওয়ার পর উত্তরাধিকার সূত্রে সেখানে বসবাস করছিল ৪০টি পরিবার। কিন্তু জায়গাটি হঠাৎ করেই পুলিশের বলে দাবি করা হয়।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র এএসপি (সদর) মীর মো. সাফিন মাহমুদ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, জমিটি পুলিশের। তবে কোন সূত্রে জমিটি পুলিশের সে বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি কিছু বলেননি।
স্থানীয়ভাবে কথিত আছে, এ জায়গায় ব্রিটিশ পুলিশের ঘোড়াশাল ছিল। এর আগে জমিটি নিয়ে মামলা হয়। বিচারিক আদালতে পুলিশ হেরে যাওয়ার পর বর্তমানে জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন।
গৃহবধূ সালমা বেগম বলেন, “তিন দিনের মধ্যে জায়গা খালি করে না দিলে বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া মিথ্যা মামলায় অনেককে আসামি করে হয়রানি করছে। “ভয়ে-আতঙ্কে গত তিন দিন ধরে আমাদের কোনো নাওয়া-খাওয়া নেই। সকাল-বিকেল পুলিশ এসে হুমকি-ধমকি দিয়ে জায়গা খালি করতে বলছে।”
হালিমা খাতুন বলেন, “১০০ বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা এই জমি বরাদ্দ নিয়ে বসবাস করে আসছেন। হঠাৎ করে পুলিশ এসে এটা তাদের বলে দাবি করে হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যেতে বলছে। “আমরা অনেক জায়গায় দেনদরবার করেছি, সময় চেয়েছি, মামলা করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাই বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছি।”
যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসাদুল হক জানান, তারা সরকারি ওই সম্পত্তির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করছেন। কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র সাফিন মাহমুদ চলে যাওয়ার হুমকি বা উচ্ছেদের ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চাননি।
মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।“কোনো সভ্য দেশের পুলিশ এমন কাজ করতে পারে না। কোনো ধরনের আইনি প্রক্রিয়া না মেনে ৪০টি পরিবারকে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হল। এর আগে আইনবহির্ভূতভাবে ঘরবাড়ি দখলের এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিৃবতি দিয়েছিলেন যশোরের বিশিষ্টজনরা।