আ হ ম ফয়সল : নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর জেলাকে নিয়ে ‘নোয়াখালী বিভাগ’ বাস্তবায়নের দাব জোরালো হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ বিভাগ বাস্তবায়নের দাবীতে জেলা পর্যায়ে জনমত সৃষ্টি হবার পর রাজধানীতেও এ তিন জেলার বাসিন্দারা অন্দোলনে নামার ঘোণষণা দিয়েছেন। আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচী হিসেবে আগামী ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কাটাবনে বিজেম কার্যালয়ে অনলাইনগ্রুপ সম্ভাবনার রায়পুরের উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রস্তুতিমূলক সভায় এ ঘোষণা দেয়া হয়।
সংগঠনটির এডমিন জিল্লুর রহমানের আহবান ও সভা পরিচালনায় সতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে সকলেই নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবীতে গুরুত্বের সাথে মতামত তুলে ধরেন। সভায় মাইজদীর জোবায়েদ হোসেন জুব বলেন, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবী এটা আমাদের অধিকার। সবাই সম্মিলিত ভাবে এ অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অংগ্রহণ করতে হবে।
বেগমগঞ্জের ওয়াহিদ উদ্দিন বলেন, দল মত নির্বিশেষে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি করে এ আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করতে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। লক্ষ্মীপুর সদরের এমরান হোসেন রনী বলেন, নোয়াখালী বিভাগ চাইলেই হবে না, কেন চাই সেটি সরকারকে বোঝাতে হবে। দাবী আদায়ে ঐতিহ্যগত নোয়াখালী ইজমকে কাজে লাগাতে হবে। লক্ষ্মীপুর সদরের ফিরোজ আলম টিপু বলেন, জাতীয়ভাবে নিজস্ব পরিচয় ধরে রাখতে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে। তিন জেলার নাগরীকদেরকে সমন্বয় করে আন্দোলন জোড়দার করতে হবে। কমলনগরের সানা উল্লহ সানু বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালীর মিডিয়াগুলোকে গুরুত্বের সাথে বিভাগ বাস্তবায়নের সংবাদ প্রচার করতে হবে। এ দাবীকে সামাজিক আন্দোলনে রুপ দিতে হবে। বিভিন্ন স্থানে নোয়াখালীর ভাষার চর্চা বাড়াতে হবে।
রামগঞ্জের মির্জা তারেকুল কাদের বলেন, সারা বিশ্বে নোয়াখালী একটি রয়েল জেলা। যার ঐতিহ্য মোগল আমল থেকেই চলে আসছে। তিন জেলার মধ্যে একটি ঐক্য গড়ে তুলে সুপরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে। ফেনীর ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন এটি আমাদের প্রানের দাবী। এ দাবী আদায়ে তিন জেলার সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে। ফেনীর বিভিন্ন সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনকে আরো জোড়দার করতে হবে।
রায়পুরের মাহমুদুল হক নান্নু বলেন, নোয়াখালীবাসীরা স্বাধীনতার দাবী রাখে। এবার নোয়াখালীবাসীরা তাদের সক্রিয়তার স্বাধীনতা চায়। নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। রামগঞ্জের ফরিদ আহমদ বাঙ্গালী বলেন, চর পড়ে নোয়াখালীর পরিধী দিন দিন বাড়ছে। নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য যৌক্তিকভাবে দাবীগুলো তুলে ধরতে হবে। আন্দোলন বাস্তবায়নে রাজনৌতিক সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে হবে। নোয়াখালী অথবা উপকূলীয় বিভাগও হতে পারে। রায়পুরের কাজী মঞ্জুরুল আলম বলেন, নোয়াখালী বাসীর সতন্ত্র সক্রিয়তা আছে। এ আন্দোলনে মিডিয়ার ভূমিকা অগ্রগণ্য। আন্দোলন বাস্তবায়নে একটি লিয়াজো কমিটি করা প্রয়োজন।
রামগতির এএইচএম নোমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে আসার পর প্রথম নোয়াখালীতেই আসেন। তার সেই পরিদর্শন, স্মৃতী বিজড়িত রামগতিতে ‘শেকের কিল্লা’ স্থানটি এখনো আছে। রাজনৌতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুর প্রথম পরিদর্শিত স্থান নোয়াখালী নামে একটি বিভাগ বাস্তবায়ন অনেক গুরুত্ব বহন করে।
আগামী ২৯ অক্টোবর নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবীতে ঢাকায় আয়োজিত মানববন্ধন বাস্তবায়নের জন্য সকলের মতামতের ভিত্তিতে বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক ও গুসি আন্তর্জাতিক শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী এএইচএম নোমানকে আহবায়ক, কুয়েতের বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কাজী মঞ্জুরুল আলমকে সদস্য সচিব ও দৈনিক নতুন সময়ের নির্বাহী সম্পাদক জিল্লুর রহমানকে প্রধান সমন্বয়কারী করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।