বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ শেষ হয়ে গেল অমর একুশের গ্রন্থমেলা। অত্যন্ত সুশৃংখল ও শান্তিপূর্ণভাবে মেলার সমাপ্তি ঘটলো। শনিবার রাত নয়টায় বইয়ের জগতের এই মিলন মেলার পর্দা নামে।
শেষ দিনে ৬৩টি নতুন বই প্রকাশ পায়। এ নিয়ে এবারের মেলায় ১ মাস ২দিনে সর্বমোট ৪ হাজার ৮৩৪টি নতুন বই প্রকাশ পেল। গত বছরের মেলায় মোট নতুন বই প্রকাশ পেয়েছিল ৪ হাজার ৫৯০টি। এ বছর নতুন বইয়ের সংখ্যা ২৪৪টি বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে মেলায় এবার ১ মাস দুইদিনে ৮০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গত বছরের মেলায় বই বিক্রি হয়েছিল ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকার। গত বছরের মেলার চেয়ে এবার সাড়ে ৭ কোটি টাকা বিক্রি বেড়েছে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মেলা উপলক্ষে গঠিত নীতিমালা বাস্তবায়ন কমিটির সার্ভে টিম মেলার এইসব তথ্য সংগ্রহ করেছে।
গত মাসের পয়লা ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেছিলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর থেকে পুরো ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ দিন মেলা চলে। তবে প্রকাশকদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলার সময় দুইদিন বাড়িয়ে ২ মার্চ পর্যন্ত বর্ধিত করেন। ফলে এক মাস দুই দিন এবারের মেলা চলে।
এবারের মেলায় বাংলা একাডেমির বই বিক্রি হয়েছে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার। প্যাভিলিয়ন ছিল ২৪টি। একটি বাদে ২৩টি প্যাভিলিয়নে কোটি টাকার উপরে বই বিক্রি হয়েছে বলে ড. জালাল জানান।
এ ছাড়া তিনটি প্যাভিলিয়নে দুই কোটি টাকার উপরে বিক্রি হয়েছে বলে জরিপকর্মীরা তথ্য দিয়েছেন। এবার মেলায় সর্বমোট ৭১৯টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ৭৭০টি ইউনিট স্টল ছিল।
মেলায় প্রকাশিত নতুন বইয়ের ওপর এবার জরিপ করেছে মেলা কমিটির পক্ষ থেকে। কমিটি পক্ষে একাডেমির কাছে পেশ করা তথ্যে জানা যায়, এবার মেলায় ১১৫০টি মানসম্মত বই প্রকাশ পেয়েছে, যে বইগুলোকে জরিপকর্মীরা উন্নতমানের বলে অভিমত রেখেছেন।
ড. জালাল এবারের মেলা সম্পর্কে বলেন, এই মেলা ছিল অসাধারণ। মেলার মূল থিম ‘ বিজয় ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ : নবপর্যায়’কে কেন্দ্র করে মেলা নান্দনিকতায় ছিল ভরপুর। স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মেলার পরিবেশ ছিল অন্যান্য বারের চেয়ে নান্দনিক ও শোভিত। অন্যান্য সব ব্যবস্থা ছিল লক্ষ্যনীয়। নতুন নতুন আয়োজনও ছিল। সব মিলে এবারের মেলা সফলভাবে শেষ হলো বলে তিনি অভিমত রাখেন।
তিনি জানান, মেলায় এবার নিরাপত্তা কাজে বিভিন্ন বাহিনীর ১২ শত সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। তারা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচয় রেখেছেন।
সোহরাওয়াদী উদ্যানে মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে এ মাস দুই দিনে ৮২৪টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে ৩ হাজারেরও বেশি লোক অংশ নেন। ৩০ দিনে ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে ৩১০ জন প্রবীণ, নবীন, তরুণ লেখক, প্রকাশক ও সাহিত্যিক তারা তাদের নতুন বই নিয়ে পাঠকের মুখোমুখী হন।