ঝালকাঠির রাজাপুর পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ২৩ নভেম্বর বরিশাল অঞ্চলের মধ্যে রাজাপুর থানা সর্বপ্রথম পাক হানাদার মুক্ত হয়, উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমন চালায়, শুরু হয় গুলি-পাল্টা গুলি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাতভর যুদ্ধের পরে হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ২৩ নভেম্বর ভোর রাত ৪টার দিকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এতে বরিশাল বিভাগের ৯নং সেক্টরের মধ্যে ঝালকাঠির রাজাপুর থানা সর্বপ্রথম পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। ৯নং সেক্টরের মধ্যে সর্ব প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয় রাজাপুরে। শত্রু মুক্ত হয় রাজাপুর থানা, বন্ধ হয় গণহত্যা।
রাজাপুর থানা মুক্ত হওয়ার ১৫ দিন আগে উপজেলার আঙ্গারিয়া গ্রামের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ও বাবুল হোসেন পাক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে শহিদ হন। এ দিনের যুদ্ধে শহিদ হন আবদুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক এবং গুরুতর আহত হন মো. হোসেন আলীসহ কমপক্ষে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা।
সে দিনের এ যুদ্ধে তিন শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। এ যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন ৯নং সেক্টরের অন্যতম সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর। এ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমরের পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শাহজাহান ওমর বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন।
৯নং সেক্টরের মধ্যে সর্বপ্রথম রাজাপুর থানা শত্রু মুক্ত হওয়ায় ১৯৯৫ সালে রাজাপুরে নির্মাণ করা হয় মুক্তিযোদ্ধা মিলন কেন্দ্র। এছাড়া শহীদের স্মরণে তাদের নামানুসারে রাজাপুরে কয়েকটি সড়কের নামকরণ করা হয়। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও রাজাপুর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত দুটি বধ্যভূমি ও তিনটি গণকবরসহ সাতটি স্থান আজও অবহেলিত ও অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। উদ্যোগের অভাবে নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে এসব স্থানগুলো।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ বলেন, “বদ্ধভূমিতে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এছাড়াও বদ্ধভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”