দুই সেতুসহ এক থোকা উন্নয়ন প্রকল্পের দ্বার খুলল

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ শনিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু উদ্বোধন করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য হ্রাসের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাচ্ছি… আমাদের সর্বদা একটি লক্ষ্য দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা, তাদের দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল করা।

নবনির্মিত সেতু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে খুবই সহায়ক হবে। সেতুগুলো আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। বর্তমান বিশ্ব এখন একটি বৈশ্বিক গ্রাম। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য সকলের সঙ্গে মিলে চলতে হবে। আমরা মনে করি, এই কাজগুলো শুধু আমাদের জন্য নয়, আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও অনেক অবদান রাখবে। তিনি বলেন, সরকার সড়ক, নৌ, রেলপথ ও বিমান যোগাযোগ উন্নয়ন করছে এবং দেশের জনগণ সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির সুফল পাচ্ছে। ঢাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে।

ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে স্বল্প বিরতির আন্তঃনগর ট্রেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’র উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব দিকে দৃষ্টি দিয়েছি এবং উন্নয়ন করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। পঞ্চগড় প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। পরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, গাজীপুর ও টাঙ্গাইলের প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। গত ১৬ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত একই প্রকল্পের আরেকটি সেতু- দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

জাপানি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওবায়শি করপোরেশন, শিমঝু করপোরেশন, জেএফএফ করপোরেশন ও আইএইচআই ইনফ্রা সিস্টেমস কোম্পানি লি: ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতীর সঙ্গে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। সেতু তিনটি নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার ৪৮৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ফ্লাইওভার, কালিয়াকৈর, দেওহাটা, মির্জাপুর ও ঘারিন্দা আন্ডারপাস এবং কাড্ডা-১, সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্পের আওতায় জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে বিমাইল সেতুরও উদ্বোধন করেন।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রজেক্টের এক নম্বর প্যাকেজের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা ফ্লাইওভার, কড্ডা-১ সেতু, বাইমাইল সেতু ও কালিয়াকৈর আন্ডারপাস খুলে যাওয়ায় নিঃসন্দেহে যোগাযোগে নতুন মাত্রা পেল। দুটি ফ্লাইওভারই চার লেনের।

এরমধ্যে কোনাবাড়ি ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ ১৬৪৫ মিটার, নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২১০ দশমিক ৫৩ কোটি টাকা। চন্দ্রা ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ ২৮৮ মিটার, নির্মাণ খরচ ৪৫ দশমিক ২১ কোটি টাকা। কড্ডা-১ সেতুর দৈর্ঘ ৭০ মিটার, ব্যয় হয়েছে ১৪ দশমিক ৫৮ কোটি টাকা। ১২১ মিটার দৈর্ঘের বাইমাইল সেতু নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ১৭ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা। এছাড়া ৪২০ মিটার দৈর্ঘের কালিয়াকৈর আন্ডারপাস নির্মাণে ব্যয় হয় ১২ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts