বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ নারী জাগরণের অগ্রদূত জননী সাহসিকা কবি সুফিয়া কামালের ১০৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ ডুডল বানিয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনটি।
বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে গুগলের বাংলাদেশের ডোমেইন হোম পেজে দেখা যাচ্ছে কবি সুফিয়া কামালকে। বিশেষ দিন, বিশেষ ঘটনা বা বিশেষ কোনো মুহূর্ত ফুটিয়ে তুলতে বরাবরই ডুডল প্রকাশ করে গুগল। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার একজন সমাজসেবী ও নারীনেত্রীর নাম বেগম সুফিয়া কামাল। তিনি মানবতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ধারক ও বাহক। ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের এক অভিজাত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। সুফিয়া কামাল ছিলেন বাংলা ভাষার বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ও সংস্কৃতি কর্মীদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। কবি সুফিয়া কামাল তার সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি নারীমুক্তি, মানবমুক্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন।
মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সংগঠনটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। এর মধ্যে রয়েছে কবি সুফিয়া কামাল স্মারক বক্তৃতা, কবি সুফিয়া কামাল সম্মাননা পদক প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ‘সুফিয়া কামাল ও সমাজ বিকাশের আন্দোলন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করবেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক কাজী মদিনা। এ বছর ‘কবি সুফিয়া কামাল সম্মাননা’ প্রদান করা হবে— একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরকে।
আগামীকাল ‘কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার উদ্যোগে সকালে সেগুনবাগিচা মেলা প্রাঙ্গণে আনন্দানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, সম্মানিত অতিথিদের মধ্য থেকে কবির স্মৃতিচারণ করবেন কবিকন্যা মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল।
যে সময়ে সুফিয়া কামালের জন্ম তখন বাঙালি মুসলিম নারীদের গৃহবন্দি জীবন কাটাতে হতো। স্কুল-কলেজে পড়ার কোনো সুযোগ তাদের ছিল না। পরিবারে বাংলা ভাষার প্রবেশ একরকম নিষিদ্ধ ছিল। সেই বিরুদ্ধ পরিবেশে সুফিয়া কামাল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ পাননি। তিনি পারিবারিক নানা উত্থানপতনের মধ্যে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হন। ১৯২৬ সালে তার প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’ সে সময়ের প্রভাবশালী সাময়িকী সওগাতে প্রকাশিত হয়। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তার সাহিত্যচর্চা চলতে থাকে।
১৯৩৭ সালে তার গল্পের সংকলন কেয়ার কাঁটা প্রকাশিত হয়। ১৯৩৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ সাঁঝের মায়ার মুখবন্ধ লেখেন কাজী নজরুল ইসলাম। বইটি বিদগ্ধজনের প্রশংসা কুড়ায় যাদের মাঝে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। দেশবিভাগের পূর্বে তিনি নারীদের জন্য প্রকাশিত সাময়িকী বেগমের সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় সুফিয়া কামাল মারা যান।