খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল ব্যুরো: বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে বরিশাল নগরীর দক্ষিণ প্রান্তের রূপাতলী হাউজিং এলাকা। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় হাউজিংয়ের বাসিন্দাদের। হাউজিংয়ের মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও থাকেন পানিবন্দি।
রূপাতলী হাউজিং এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর বৃহৎ এ আবাসিক এলাকার প্রধান সড়কসহ সব সড়কে এক পশলা বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুুবে যায়। হাউজিংয়ের অভ্যন্তরের ড্রেনগুলোর পানি নিস্কাশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ কারণে একদিন বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা থাকে এক সপ্তাহ। সড়কে পানি জমে থাকার কারণে ময়লা-আবর্জনা পচে হাউজিং এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। আবার মশার উপদ্রবও বেড়ে যায়। সড়কগুলো দিনের পর দিন পানির নিচে ডুবে থাকার কারণে সেগুলোর পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে।
রূপাতলী হাউজিংয়ের ভেতরে রয়েছে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিতে আসা-যাওয়ার সড়ক এবং মাঠ বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে বিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা ভোগান্তি মেনে নিয়েই যাতায়াত করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পাপিয়া জেসমিন বলেন, সড়কে পানি জমার বিষয়টি হাউজিং কর্তৃপক্ষ এবং সিটি করপোরেশনের সংশ্নিষ্ট দপ্তরে জানানো হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
তানযীমুল উম্মাহ নামের একটি মাদ্রাসার তিনটি ক্যাম্পাস রয়েছে হাউজিংয়ে। এ মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থীরা অনেকটা পানিবন্দি অবস্থায় থাকেন। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান জানান, বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বৃষ্টির পর আবাসিক শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে বের হতে পারে না। রূপাতলী হাউজিংয়ের ভেতরে বিভিন্ন ভবনের ফ্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক ছাত্রছাত্রী।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর আহম্মেদ ও প্রতীক বিশ্বাস জানান, জলাবদ্ধতার কারণে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। একদিন বৃষ্টি হলে সড়কে পানি থাকে ৫ থেকে ৭ দিন। এ অবস্থায় ছাত্রীরা খুবই দুর্ভোগের শিকার হয়।
রূপাতলী হাউজিং সোসাইটির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে আমরা অনেকটা গৃহবন্দি হয়ে আছি। এ দুর্ভোগের কথা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের সংশ্নিষ্ট বিভাগে জানানো হলেও তারা জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো পদপে নেননি।
রূপাতলী হাউজিং বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরীফ মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমি নিজেও জলাবদ্ধতার কারণে প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। সংকট সমাধানের জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপরে কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দিয়ে ড্রেনগুলোতে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হয়েছে। তবে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ লাঘব হবে না।