বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ‘স্বপ্ন মা সেরা দশ’ প্রতিযোগিতার সেরা মা নির্বাচিত হয়েছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ইতি আক্তার। দ্বিতীয় হয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ফাতেমা আক্তার, তৃতীয় হন একই জেলার রামগতি উপজেলার রাজিয়া বেগম। বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নন্দিতা মন্ডল।
শনিবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মহাখালী ব্র্যাক সেন্টার ইনে প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি সংস্থা ডরপ ও এফএনবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান, এমপি। স্বপ্ন মা সেরা দশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের প্রত্যেককে স্যাস, ক্রেস্ট, প্রাইজবন্ড, সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। প্রথম বিজয়ীকে মুকুট পরিয়ে দেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সমৃদ্বিবন্ধু ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।
এ সময় ভারতের ইয়োগা বিশেষজ্ঞ, ‘ডরপ স্বপ্ন মা’ শুভেচ্ছাদূত মিস শ্বেওতা ওয়ার্পে, এফএনবির পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, বুরো বাংলাদেশের ঝুকি ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রানেস চন্দ্র বনিক প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। ডরপ’র চেয়ারম্যান মোঃ আজহার আলী তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতে অয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন মাতৃত্বকালীন ভাতা ও স্বপ্ন প্যাকেজ কার্যক্রমের প্রবর্তক ও ডরপ এর প্রতিষ্ঠাতা এএইচএম নোমান।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত দারিদ্র বিমোচনে মাতৃত্বকালীন ভাতা কেন্দ্রীক ‘স্বপ্ন প্যাকেজ’ প্রাপ্ত মায়েদের পারিবারিক স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, আর্থ-সামাজিক জীবন মান, ব্যক্তিত্ব, নেতৃত্ব ও সৌন্দর্য বিবেচনায় কর্মসূচির ১২ উপজেলা থেকে ১২জন মাকে নিয়ে ব্যাতিক্রমধর্মী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
‘স্বপ্ন মা স্বপ্নের দেশ, আগামী পৃথিবীর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বপ্ন মায়েরা ‘মা সংসদ’ অধিবেশন উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া নির্বাচনের জন্য স্বপ্ন প্যাকেজ পেয়ে সন্তুষ্টি, আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক মর্যাদা, স্বপ্ন প্যাকেজ থেকে সাফল্য, আত্ম ও পরিবার ব্যবস্থাপনা ও দুরদর্শিতা পরিবর্তনের দৃঢ়তা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা বিষয়ে স্বপ্ন মায়েরা বিচারকদের আলাপচারিতার মুখোমুখি হন। চুড়ান্ত পর্বের বিচারক হিসেবে ছিলেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান ও ডর্প’র উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইলিয়াস কাঞ্চন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দিলরুবা সাথী।
‘স্বপ্ন মা সেরা দশ’ প্রতিযোগিতায় উপজেলা থেকে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে সান্ত্বনা পুরস্কার পেয়েছেন চাটখিলের (নোয়াখালী) সাবিনা ইয়াসমিন, কমলনগরের (লক্ষ্মীপুর) রাবেয়া বেগম, সিংড়ার (নাটোর) শ্যামলী আক্তার, শ্রীমঙ্গলের (মৌলভীবাজার) নেওয়া আক্তার, মুজিবনগরের (মেহেরপুর) সালমা বেগম, দৌলতখাঁনের (ভোলা) মিনারা বেগম, উলিপুরের (কুড়িগ্রাম) লিপি বেগম, বদলগাছির (নওগাঁ) মেরিনা বেগম।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.এ. মান্নান বলেছেন, সরকার দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করছে। আগামীতে এ ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। স্বপ্ন প্যাকেজ কর্মসূচি গভীরভাবে বিবেচনায় এনে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। মন্ত্রী মা সংসদ কার্যক্রমের প্রশংসা করে সাফল্য কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে স্বপ্ন প্যাকেজ কার্যক্রম দেশব্যাপী সম্প্রসারণের দাবিতে স্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী। অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটি আকর্ষণীয় সংকলন প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে মুকুট বিজয়ী ইতি আক্তার প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যে মা পদ্মা সেতু করতে পারেন, সে মা স্বপ্ন মা’ও গড়তে পারেন’।
অনুষ্ঠানে মাতৃত্বকালীন ভাতা’র গুণগত মান ধরে রাখতে তথ্যভান্ডার সৃষ্টি করা, মাতৃত্বকালীন ভাতা’র সংখ্যা না বাড়িয়ে মেয়াদকাল ৩ বছরের স্থলে শিশুর স্কুল ভর্তি পর্যন্ত ৫ বছর করা, ভাতা’র পরিমাণ ৮শ টাকার স্থলে ন্যূনতম গার্মেন্টস শ্রম মজুরির সমান ৮ হাজার টাকা, দারিদ্র্য বিমোচনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাইলট আকারে ১০ উপজেলায় বাস্তবায়িত ‘স্বপ্ন প্যাকেজ’ কার্যক্রম সারা দেশে বাস্তবায়ন করার প্রস্তাব করা হয়।