ভালোবাসায় মুখরিত পাতালতার মুক্তাঙ্গন
শি উ ল ম ন জু র
ভালোবাসতে ভালোবাসতে আমি তো ভাবি, ভালোবেসেই যেনো
নিঃশেষ হয়ে যায় এ জীবন।
পাতালতার পাঠশালায় গিয়ে দেখি অজস্র ফুল, অজস্র প্রজাপতি,
অজস্র পাখি, অজস্র সুন্দর জীবন গীত গাইছে আনন্দময়
প্রতিদিন। ফুলেরা বিলিয়ে দিচ্ছে আপন সৌন্দর্য ও অবারিত ঘ্রাণ।
প্রজাপতি ও পাখিরা উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে প্রকাশ্যে গেয়ে চলেছে
মহান সৃষ্টিকর্তার সংগীত। কোথাও অভাব নেই ভালোবাসার।
ভালোবাসায় ভালোবাসায় মুখরিত পাতালতার মুক্তাঙ্গন।
নদী বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি ছোট বড় পালতোলা সারি সারি নৌকো
জীবন গীত গেয়ে গেয়ে ভেসে যাচ্ছে গভীর উচ্ছ্বাসে আর আশপাশের
দীর্ঘ জমিন নদীর পানি নিয়ে সবুজে সবুজে রঙিন হয়ে যাচ্ছে
শস্যমাঠ।
হেঁটে হেঁটে ঝর্ণাদের ইশকুলে গিয়ে দেখি, পাথরের বুকচিরে
প্রবাহিত হচ্ছে, পাহাড়ি জলের কলরব। কী যে অপরূপ দৃশ্য।
মুগ্ধতায় ভরে উঠে আমাদের প্রাণ। জলের কলরব ছুঁয়ে ছুঁয়ে নির্মল
আনন্দে আনন্দে বেড়ে উঠছে পাহাড়ি কন্যার জীবন।
হাওরে বাওরে গিয়ে দেখি কী ভীষণ শীতল বাতাস জলের ছোঁয়া
নিয়ে বহে যাচ্ছে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, গঞ্জ থেকে গঞ্জে আর
দীর্ঘপ্রান্তরে ভালোবাসার নাগর দোলায় ভাসছে গোটা পৃথিবী। কী যে
অপরূপ পাঠশালার এই মুক্তজীবন, প্রাণ খোলে হাসছে গাইছে
হাওয়ায় যেনো ভাসছে জীবনানন্দে।
আমি তো ভাবি ভালোবাসতে বাসতে যেনো আগামি দিনগুলো
শস্যভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। সমুদ্র বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি অবারিত
জলের হাতছানি, হৃদয় প্রসারিত করে মেলে দিয়েছে তার সমুদ্র
সংগম। আর নোনাজলের ভালোবাসা নিয়ে দেশান্তরি হয়ে যাচ্ছে
লালনীল জাহাজগুলি। এখানেও দেখি, জীবনানন্দের পাঠশালা
ছড়িয়ে দিচ্ছে আলোকিত জীবনের হাতছানি।
আমি তো ভাবি শৈশবে কেনো বৃক্ষের পাঠশালায় সবুজ
ভালোবাসার পাঠ নিইনি, কৈশোরে কেনো যাইনি নদী বিদ্যালয়ের
ঢেউ খেলানো জলের আঙ্গিনায়। আমি তো ভাবি যৌবনের দূরন্ত
বেলায় কেনো যাইনি সমুদ্র বিদ্যালয়ের বিশাল ক্যানভাসের
আলোয়।
এখন নিরালায় বসে বসে ভাবি, দুঃখ নেই, ভালোবাসায় ভালোবাসায়
ফতুর হয়ে যাক এই জীবন, ভালোবাসার আঙ্গিনা, যে কোনো গ্রহের
চেয়েও সীমাহীন বড়। ভালোবাসায় ভালোবাসায় শস্যভারাক্রান্ত
হয়ে ওঠুক আমাদের এই মানবজমিন। তবেই বুঝি মাটির বুকে
বন্ধ হতে পারে চরদখলের রক্তপাত।