আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) ॥ ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপের ২২ মার্চ নির্বাচন উপলক্ষে প্সিরাজদিখান উৎসব মুখর। উপজেলার বিভিন্ন ইউপির প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাম-গঞ্জের পথে-প্রান্তরে, মাইকিং, গনসংযোগ, মটর সাইকেল মহড়া এবং উঠান বৈঠকের মাধ্যমে প্রচারণা চালান দলীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সংরক্ষিত মহিলা প্রার্থীরা।
সিরাজদিখানে ১০টি ইউপিতে ভোটাররা প্রার্থীদের চুল চেরা বিচার-বিশ্লেষণ করছেন। এ নির্বাচনে ৩৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের ১০ জন, বিএনপির ১০ জন ও অন্যান্য দল সহ স্বতন্ত্র ১৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। তার মধ্যে কোলা ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে তৈরি করা হয়েছে প্রার্থীদের পোস্টার দিয়ে ক্যাম্প। আর চলছে নানা রকম চায়ের আয়োজন। এলাকার রাস্তা-ঘাট ছেয়ে গেছে সাদা-কালো ছবি যুক্ত পোস্টারে। বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলছে মাইক দিয়ে প্রচারণা। উপজেলার সর্বত্রই জনসাধারণদের মাঝে সকাল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা। বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করার ফুরসত নেই প্রার্থী ও কর্মীদের হাতে। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে নিজের পরিবারসহ কর্মীদের নিয়ে ছুটছেন সবাই ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে আর শোনাচ্ছেন হাজারও রকমের প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনকে ঘিরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও জমজমাট।
কিছু কিছু প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। এ ব্যাপারে বেশ কিছু অভিযোগও জমা হয়েছে নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে। তাছাড়া ১০ টি ইউপিতে ২০ টি কেন্দ্রই ঝুকিপূর্ণ। এর মধ্যে লতব্দী, বাসাইল ও বয়রাগাদী অন্যতম। ছোট ছোট ঝামেলায় পুলিশ রাতদিন পরিশ্রম করছে। প্রথম বারের মতো দলিয় প্রতিকে নির্বাচন হচ্ছে বিধায় ভোটাররা অজানা শঙ্কা ও ভয়ের মধ্যে রয়েছে। তবে উৎসাহ-উদ্দিপনাটা এবার কোন অংশেও কম নয়।
রামানন্দ গ্রামের নতুন ভোটার জোবায়ের বলেন, সরকার দলিয় প্রতিক দিয়ে চেয়ারম্যানী নির্বাচন দেয়ায় উৎসাহটা একটু কমই। ভয়টা একটু বেশি লাগছে। কারণ জাতীয় নির্বাচনের মতো সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে এই ইউপি নির্বাচনে। জানিনা কি হয়।
ইছাপুর ইউপিতে বিএনপি প্রার্থী কাজী কামরুজ্জামান লিপু বলেন, সর্বশেষ প্রচারে ইছাপুরা ইউপির সর্বস্তরের জনগণের দোড়গোড়ায় আমার সালাম পৌঁছিয়েছি। বিপুল পরিমাণে আশ্বাস পেয়েছি। বিগত নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যেতে পারেনি। এবার ঠিকমতো ভোট দিতে পারলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হব ইনশাআল্লাহ।
বাসাইল ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুজ্জামান পনির বলেন, বাসাইল ইউনিয়নের পাথরঘাটা, দক্ষিণ রাঙ্গামালিয়া, উত্তর রাঙ্গামালিয়া ও চর বিশ্বনাথসহ ৫টি কেন্দ্র খুবই ঝুকিপূর্ণ। বাসাইলের সর্বত্র অস্ত্রের ঝনঝনানি। এর পরিবেশ খুবই উত্তপ্ত। জনগণ শঙ্কিত আছে এ জন্য। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হব।
সরেজমিনে মধ্যপাড়া ইউপিতে গেলে দেখা যায় আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর করিম হাজিকে প্রচারণা চালাতে। তিনি এ ইউনিয়নের জনগণের কাছে সন্ত্রাস নির্মুল করার প্রতিশ্রুতি দেন। তাকে নির্বাচিত করা হলে এ এলাকার ব্যপক উন্নয়নেরও আশা ব্যক্ত করেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ আফজাল আহমেদ জানান, আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আজই (শনিবার) ব্যালট পেপারসহ আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র চলে আসবে। প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করলে আমরা একটি ফেয়ার নির্বাচন উপহার দিতে পারব।