বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে প্রস্তুত টুঙ্গিপাড়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) টুঙ্গিপাড়া আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদেরও টুঙ্গিপাড়া আসার কথা রয়েছে। তবে দিবসটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে আয়োজিত শিশু সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সারা জেলায় সাজ সাজ রব। টুঙ্গিপাড়ার সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে শেষ হয়েছে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ। বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। টুঙ্গিপাড়াসহ সারা জেলায় নেওয়া হয়েছে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গত ৫ মার্চ গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার কাছে পাঠানো প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ কাজী নিশাত রসুল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী এদিন টুঙ্গিপাড়ায় সকাল ১০টায় জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় অনার গার্ড প্রদান করা হবে। পরে তিনি ১০টা ৪৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
এরপর গত ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ কাজী নিশাত রসুল স্বাক্ষরিত সংশোধিত এক চিঠিতে জানানো হয়, টুঙ্গিপাড়ায় সকাল ১০টায় জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় অনার গার্ড প্রদান করা হবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে সমাধি সৌধের মূল স্তম্ভ, বঙ্গবন্ধু ভবন, মুক্তমঞ্চ, লাইব্রেরি, সংগ্রহশালা, ক্যাফেটরিয়া, মসজিদ, বকুলতলা চত্ত্বর এলাকায় শেষ হয়েছে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও উন্নয়নমূলক কাজ। বিভিন্ন অবকাঠামোতে রংয়ের কাজ ও ফুল গাছের চারা লাগানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সমাধির সৌধ কমপ্লেক্সসহ সারা জেলায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেতৃবৃন্দের আগমনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উৎসাহ উদ্দীপনা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের স্বাগত জানাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত মহাসড়ক শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে গোপালগঞ্জকে সাজানো হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ আহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। তাদের স্বাগত জানাতে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণস্থানে তোরণ ও ব্যানার দিয়ে সাজানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে টুঙ্গিপাড়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীর সাথে সাথে ভোরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীতে যোগ দেয়া হবে।
গোপালগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়ায় সৌন্দর্য্য বর্ধনসহ আনুষঙ্গিক সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে। টুঙ্গিপাড়ায় আলোকসজ্জার কাজ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে টুঙ্গিপাড়ায় সকল কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া আগমনকে নির্বিঘ্ন করতে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া গোপালগঞ্জেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
শিশু সমাবেশ স্থগিত হবার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘সারা বিশ্বে এখন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসে টুঙ্গিপাড়ায় শিশু সমাবেশের আয়োজন করার জন্য সব কিছুই প্রস্তুত ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রোগ্রাম শিডিউলে প্রথমে শিশু সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেবার কথা থাকলেও সংশোধিত শিডিউলে তা বাদ দেয়া হয়েছে। আমরা চাই সকল শিশুরা করোনা মুক্ত থাকুন। তবে পরবর্তীতে সময় নির্ধারণ করে অনুষ্ঠানগুলো উদযাপিত হবে।’