কিছু খরচাপাতি নিয়া যান!

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ: ওরা ঠিকাদারি করে। ওদের অনেক খরচ। ওরা সব জায়গায় ম্যানেজ করে চলে। আপনারা কষ্ট করে আইছেন। কিছু খরচাপাতি নিয়া যান। আবার আইসেন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বেশি করে নিয়ে দিবোনে বলে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন সাটুরিয়া উপজেলা এলজিইডি অফিসের কার্য সহকারী দেলোয়ার হোসেন।

রোববার বিকেলে সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে একটি রাস্তার চলমান কাজের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে উপস্থিত সাংবাদিকদের ওই প্রস্তাব দেন তিনি। এই ঘটনায় দেলোয়ার হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী তৈয়বুর রহমান।

সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কৈট্টা এলাকায় এলজিইডি’র অধিনে ১৭’শ মিটার সড়ক মেরামতের উন্নয়ন কাজ চলছে। অনলাইন টেন্ডারের মাধ্যমে এক কোটি ৬ লক্ষ টাকার ওই কাজের জন্য মনোনিত হন ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরেও কাজ শুরু না করায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করার তাগিদ দেওয়া হয় উপজেলা এলজিইডি অফিসের পক্ষ থেকে। এরপর নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রি দিয়ে রাস্তার মেরামত কাজ করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উপজেলা এলজিইডি অফিস থেকে ফের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দিয়ে উপযুক্ত নির্মাণ সামগ্রি ব্যবহারের জন্য বলা হয় বলে জানা যায় এলজিইডি অফিস থেকে।

রোববার দুপুরে সরেজমিনে কৈট্টা এলাকায় ওই রাস্তা মেরামতের কাজে নিন্মমানের খোয়া ব্যবহার করতে দেখা যায়।রাস্তা মেরামতের কাজও চলছে ঢিমেতালে। রাস্তা মেরামতের কাজের বিষয়ে নানা নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রি ব্যবহারের বিষয়ে অভিযোগ করেন স্থানীয়রাও।

আবুল হোসেন নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, নামে মাত্র রাস্তা মেরামতের কাজ চলছে। এখানে সরকারী টাকা অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। যে খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে তা অল্প কয়েকদিনেই নষ্ট হয়ে যাবে। রাস্তার পাশে মাটি নেই। ওইভাবেই কোন রকমে জোড়াতিালি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ অবহিত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, উপজেলা পরিষদে রয়েছেন তিনি। এখানে আসলে বক্তব্য দিবেন। পরে তিনি এলজিইডি অফিসের দেলোয়ার হোসেনকে সাথে নিয়ে নিউজ না করে খরচাপাতি নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী তৈয়বুর রহমান জানান, নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে নোটিশ করার পরে রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রি দিয়ে কাজ শুরু করায় তিনিসহ উপজেলা উপ-সহকারী প্রকোশলী ও কার্য সহকারী দেলোয়ার হোসেনকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ দেওয়া হয়।

সাংবাদিকদেরকে তথ্য না দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে টাকা দিয়ে ম্যানেজের চেষ্টা করার দায়ে ফের দেলোয়ার হোসেনকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts