বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে প্রথমে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ও শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। বেজে ওঠে বিউগলের সুর। এ সময় কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। পরে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে নিহত পরিবারের সদস্য ও শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত মন্তব্য বইতে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করেন।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মন্ত্রী পরিষদ ও নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। পরে বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের পাশে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এসময় শেখ রেহানা, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, টিউলিপ সিদ্দিকী, স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, আমির হোসেন আমু, মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি,জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহামুদ, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মতিয়া চৌধুরী এমপি, জুনায়েদ আহম্মেদ পলক এমপি, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এমপি, শেখ হেলালউদ্দিন এমপি, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস,এম কামাল হোসেন, শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ নুরে-আলম চৌধুরী এমপি, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকাল ৭টার পর রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে স্থাপিত প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
শ্রদ্ধা নিবেদন করার পর কিছু সময় সেখানে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। পরে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এ সময় অন্যদের মধ্যে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, বঙ্গবন্ধুর নাতনি সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং সংসদ সদস্যরা ছাড়াও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা নিবেদন করে চলে যাওয়ার পর সর্বসাধারণের জন্য স্থানটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শুভ শুভ শুভদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন’সহ বিভিন্ন শ্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
এরপর একে একে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি।এরপর, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ সেখানে ফুল দেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী থেকে এক বছর মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছে সরকার। বছরটি সাড়ম্বরে উদযাপনের সব প্রস্তুতি নিলেও নভেল করোনাভাইরাস ঝুঁকির কারণে জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আয়োজন সীমিত করেন প্রধানমন্ত্রী।
দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। এ দিবসে স্কুল-কলেজে শিশুদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও সেটাও এবার আর হচ্ছে না। পরিবর্তিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণের সঙ্গে মিল রেখে রাত ৮টায় মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে; যা টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আতশবাজির প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ‘মুক্তির মহানায়ক’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠান শুরু হবে।