ফরিদুজ্জামান: ‘তালেব মাস্টার’ বা ‘গলির ধারের ছেলেটি’ কে না পড়েছে! সেই কালজয়ী লেখক আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই। বাংলা’র লোকসাহিত্য, কবিতা, গল্পের অগ্রসৈনিক গেলেন পরলোকে। জন্মমাস মার্চের ১৯ তারিখে নিলেন চিরবিদায়। ‘করোনা’ কেলেঙ্কারির ডামাডোলে ঘটালেন নীরব সমাধিযাত্রা।
বাংলাদেশে পন্চাশ দশকের লেখক হিসেবে তিনি সমধিক পরিচিত। যদিও ১৯৪৭ পর্যন্ত শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে পড়েছেন। জীবদ্দশায় রবীন্দ্রনাথ তরুণ আশরাফের কবিতা পড়েছিলেন। ইতিবাচক বললেও আশরাফ সিদ্দিকী অন্য শাখায় অধিকতর আলোকিত। বাংলার লোকসাহিত্যকর্মে তিনি শীর্ষ প্রতিনিধিত্বকারী। এই লোকসাহিত্য বিষয়েই পিএইচডি করেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৬ সালে। দ্বিতীয়বারের মতো মাস্টার্সও করেন সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে। সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা: লোকসাহিত্য, কিংবদন্তীর বাংলা, বাংলার মুখ ইত্যাদি।
গল্পকার হিসেবেও সাহিত্যে স্থায়ী আসন পেয়েছেন। ‘গলির ধারের ছেলেটি’ সরকারি শিক্ষালয়ে পাঠ্য হয়। ‘ডুমুরের ফুল’ নামে চলচ্চিত্রায়িত করেন সু-পরিচালক সুভাষ দত্ত। একাধিক জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয় সাহিত্যপ্রধান চলচ্চিত্রটি।
অসংখ্য পদক-পুরস্কারে ভূষিত লেখক আশরাফ সিদ্দিকী। ১৯৬৮-তে বাংলা একাডেমি, ১৯৮৮-তে একুশে পদক। ১৯৯৯-তে পান লোকশিল্পী ‘আব্বাসউদ্দীন সম্মাননা’। তাঁর বিদেহী আত্মার স্বর্গীয় প্রশান্তি আমাদের একান্ত কাম্য। শোকাহত পরিবার ও নিকটজনদের প্রতি সহৃদয় সমবেদনা।
ড. আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা সাহিত্যে অবশ্য-নমস্য-নাম।