বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ জীবন স্থবির হলেও এসেছে মহিমান্বিত রাত, পবিত্র শবেবরাত। কোটি মুসলমান ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবের আবহে রাতটি অতিবাহিত করেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এ রাতে ভাগ্য নির্ধারিত হয়। ভাগ্য নির্ধারণের বার্তা নিয়ে আজ শবেবরাত এসেছে।
ফার্সি শব্দগুচ্ছ ‘শবেবরাত’-এর অর্থ ভাগ্য রজনী। এ রাতে ফজর অব্দি মসজিদে নফল ইবাদত, জিকির-আজকারে মশগুল থাকেন কোটি মুসলিম। বাংলাদেশে দলে দলে তরুণ-যুবারা রাতভর ঘুরে ঘুরে নামাজ আদায় করেন মসজিদে মসজিদে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে এবার তা করা যাবে না। বাসায় নামাজ আদায় করতে মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ঘরে থাকার সরকারি নির্দেশনাও রয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় গত সোমবার নির্দেশ জারি করেছে মসজিদে নামাজের জামাতে পাঁচজনের বেশি জমায়েত হতে পারবেন না। বহিরাগত মুসল্লি মসজিদে প্রবেশ করতে পারবেন না। শবেবরাতের রাতেও এ নির্দেশ কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ।
শবেবরাত উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণী দিয়েছেন।
ঘরে শবেবরাতের ইবাদত করার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, প্রার্থনা করি পরম করুণাময় যেন বিশ্ববাসীকে এ মহামারি থেকে রক্ষা করেন। শবেবরাতের মাহাত্ম্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানব কল্যাণ ও দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্যান্য বছর শবেবরাতে রাতভর ওয়াজ নসিহত করা হয় বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে। এবার সরকারি কোনো কর্মসূচি নেই। অন্যান্য মসজিদও তা অনুসরণ করছে। জনসমাগম হয় এমন কোনো কর্মসূচি নেই শবেবরাতে।
শবেবরাতের রাতে অনেকে আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন আহ্বান জানিয়েছে, কবর জিয়ারত থেকে বিরত থাকতে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্দেশ দিয়েছে কবরস্থানে যাওয়া যাবে না।
প্রতি বছর শবেবরাতে পুরান ঢাকাসহ রাজধানী জুড়ে বসে বাহারি রুটি ও হালুয়ার দোকান। গরুর মাংস ও চালের রুটি হয় ঘরে ঘরে। এবার রাজধানীর বেকারিগুলোতে নেই শবেবরাতে মাছ, চাঁদ-তারা আকৃতির রুটি তৈরির চিরচেনা দৃশ্য।
করোনা ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে চলছে সাধারণ ছুটি। আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ বছর শবেবরাতের ছুটি পড়ে গেছে করোনার বন্ধে। করোনার বন্ধের মধ্যে পত্রিকা অফিস সচল থাকলেও শবেবরাত উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকবে। আগামীকাল শুক্রবার সংবাদপত্র প্রকাশিত হবে না।
শবেবরাতে তরুণ-কিশোররা আতশবাজি পোড়ায়, পটকা ফুটায়। প্রতি বছর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এসব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এবার নেই তেমন কোনো বিজ্ঞপ্তি। রয়েছে ঘরে থাকার কড়া নির্দেশনা। সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় পথে পথে রয়েছে পুলিশ।