রিপন শান: বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি (বাপিডিপ্রকৌস) কেন্দ্রীয় পরিষদের পক্ষ থেকে প্রকৌশল কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা ও সালাম জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম ।
করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনা মেনে স্ব স্ব দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজেদের সুরক্ষা ও সুস্থতার প্রতি যত্নবান থাকার আহবান জানিয়েছেন এই বাপিডিপ্রকৌস নেতা।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রেরিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান-
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারা বিশ্বের সাথে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশেও যখন এর বিস্তার ঘটেছে তখন সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জনসমাগম এড়াতে সারা দেশের ন্যায় বাপিডিপ্রকৌসের সভা সমাবেশ আপাতত স্থগিত রয়েছে। সরকারি ছুটি চলমান থাকলেও অনেকেই দায়িত্ব পালনের জন্য ঘরে অবস্থান করতে পারছেন না । যা নিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যরা খুবই উদ্বিগ্ন।
দেশের এই চরম দুঃসময়ে পেশাগত দায়িত্ববোধ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে এবং গণর্পূত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো: আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে স্ব-স্ব কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে যার যার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন পিডব্লিউডির কর্মকর্তা কর্মচারীরা । বাপিডিপ্রকৌসের অধিকাংশ সদস্যই জরুরী সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবার সাথে।
সরকারী সবকটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জেলা পর্যায়ের প্রায় সকল সরকারী হাসপাতালের অবকাঠামো তৈরী, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গণপূর্ত অধিদপ্তরের। সেহেতু করোনা যুদ্ধের এই সময়টাতে অনেকগুলো হাসপাতালে নতুন নতুন আইসিইউ, করোনা ওয়ার্ড, আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরী, পিসিআর ল্যাব স্থাপন সংক্রান্ত কাজ, ইলেক্ট্র মেডিকেল ইকুইপমেন্টে বিদ্যুত সংযোগ, সার্বক্ষণিক গ্যাস, বিদ্যুৎ ,পানি সরবরাহ , পয়:প্রণালী নিষ্কাসনসহ চিকিৎসা সহায়ক নানাবিধ কাজ গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকেই জরুরী ভিত্তিতে সম্পাদন করতে হচ্ছে।
হাসপাতালগুলোতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ডাক্তার নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে থেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে প্রকৌশলকর্মীরাও স্বাস্থ্যকর্মীদের ন্যায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন।
তিনি বলেন- গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা কর্তব্যবোধ ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়েই তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন । শুধু পিডব্লিউডি নয়, বিদ্যুৎ,গ্যাস, স্থানীয় সরকার, ওয়াসাসহ সকল মন্ত্রনালয়ে কর্মরত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিরলসভাবে দেশসেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। মাঠপর্যারের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তাদের কর্তব্যপালনে অতীতের ন্যায় অবিচল থাকবে।
ভিডিওবার্তায় আমিনুল ইসলাম আরো বলেন- করোনার সাথে যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা যেন দেশ সেবায় কাজ করে যেতে পারি, সেজন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ন্যায় আমাদেরকেও করোনার থাবা থেকে সুরক্ষার বিষয়টি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিবেন বলে আমরা মনে করি।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ কর্তৃক নিরবচ্ছিন্নভাবে কর্ম সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির পক্ষ থেকে তিনি ৪টি সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করেন।
সুপারিশ এক #
মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, কেপিআই স্থাপনা ও মাঠপর্যায়ে জরুরী কাজের সাথে জড়িত কর্মকর্তা কর্মচারীদের সুবিধার্থে অন্ততঃ করোনাকালীন সময়ে ট্রান্সপোর্ট সুবিধা প্রদান।
সুপারিশ দুই #
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যসেবার সাথে সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলকর্মীদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ ।
সুপারিশ তিন #
যেহেতু স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি থেকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলকর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালনসহ করোনা মোকাবেলায় কাজ করে চলছে, সেহেতু তাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রনোদনা প্যাকেজের আওতায় আনার জন্য অনুরোধ ।
সুপারিশ চার #
পিডব্লিউডির প্রকৌশলীগণ ইতোমধ্যেই বৈশাখী উৎসব ভাতার অর্ধেক অংশ প্রধান প্রকৌশলীর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন । আইডিইবি, কেনিক ঘোষিত প্রতিজন সদস্য নূন্যতম দুইজন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবানে সাড়া দিয়ে জেলা নির্বাহী কমিটির সাথে সমন্বয় করে পালন করবেন।