জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জে করোনা আক্রান্ত ২১ জনের মধ্যে সুস্থ হয়ে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন ৫ জন। সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সিংগাইর উপজেলার ৩জন, হরিরামপুর উপজেলার ১ জন এবং শিবালয় উপজেলার ১ জন রয়েছেন।
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ আজ (শনিবার) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, ‘এ পর্যন্ত জেলায় মোট ৭৩৮ জন ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে এবং এর মধ্যে ৬৬৬টি পরীক্ষার ফল পাওয়া গেছে। পরীক্ষায় ২১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হওয়ায় তাদের নিজ বাড়ি ও ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে গত কয়েকদিনে সুস্থ হয়েছেন ৫ জন। অন্যান্যরা নিজ নিজ বাড়ি ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে আরও ২ জন শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবেন।”
সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সিংগাইর পৌর এলাকার তাবলীগ জামাতে আসা ফরিদপুরের ৩ মুসুল্লী। তাদের সাথে থাকা এক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ৬ এপ্রিল তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। একদিন পর তাদের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেলে তাদেরকে প্রথমে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখানে ১ দিন রাখার পর তাদেরকে ঢাকার একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন সেখানে চিকিৎসার পর তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানান সিভিল সার্জন ডা আনোয়ারুল আমিন আখন্দ।
সুস্থ হওয়া অপর দুই ব্যক্তির একজন হলেন শিবালয় উপজেলার পুলিশ সদস্য। তিনি গোপালগঞ্জের মকসুদপুর থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন। শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল তিনি ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন এবং ওই দিনই তিনি ঠান্ডা-কাশি নিয়ে স্থানীয় শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখান থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। তার রিপোর্ট পজিটিভ আসলে তাকে জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসা ওনয়ার পর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সুস্থ হওয়া অপর ব্যক্তি হলেন হরিরামপুর উপজেলার একজন প্রেসব্যবসায়ী। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জে থাকতেন। অসুস্থবোধ করায় তিনি ৭ এপ্রিল তার নিজগ্রামে ফিরে আসেন। একদিন পর নমুনা পরীক্ষার তার করোনা পজিটিভ পাওয়া গেলে তাকে নিজ বাড়িতেই আইসোলেশনে রাখা হয়। নিয়মিত চিকিৎসকদের পরামর্শে চলায় তিনি সুস্থ হয়েছেন।
সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের নমুনা ৩ বার পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে, মানিকগঞ্জ জেলা হাসাপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের বেডের সংখ্যা ১৭ থেকে বাড়িয়ে ১০০তে উন্নীত করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য, ৭৬ জন চিকিৎসক এবং ৯০ জন নার্সের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। জনবল বাড়ানো পাশাপাশি চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যেই তা পুরোপুরিভাবে চালু করা যাবে বলে জানান হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ।