খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল ॥ ‘সব সাংবাদিক আমি দেখে নিব। প্রয়োজন হলে সাংবাদিকদের গাড়ি আটক করে কেস দিয়ে মতার প্রমাণ দিব। সাংবাদিকদের কিভাবে শায়েস্তা করতে হয় তা আমার জানা আছে’।
বুধবার সন্ধ্যায় বরিশালের ফলপট্টি চৌমাথা এলাকায় সাংবাদিকদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় এভাবেই হুমকি দেন ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট কিবরিয়া। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন ওই সার্জেন্ট। এসময় কৌশলে তাকে সরিয়ে দেন ওই এলাকায় একই সময় দায়িত্ব পালনকারী অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ােভের সঞ্চার হয়। তদন্ত সাপেে ওই সার্জেন্টের শাস্তি দাবি করেছেন সংবাদকর্মীরা।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি বরিশালের ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে নানা অজুহাত দেখিয়ে বিভিন্ন গাড়ি আটক করে ট্রাফিক পুলিশ। পরে সুযোগ বুঝে টাকার বিনিময়ে কিছু গাড়ি স্পটে ছেড়ে দিলেও অবশিষ্ট আটককৃত গাড়ি দিয়ে শুরু হয় নাটকীয় বাণিজ্য।
শুধু তাই না, সময়ে অসময়ে ঘুষ আদায়,পরিবহন থেকে মাসোহারা আদায়, ড্রাইভারদের ধমক দিয়ে চাঁদাবাজি, গাড়ি আটক বাণিজ্য, চাবি বাণিজ্য, টোকেন বাণিজ্য, কেস রসিদ বাণিজ্যসহ সব মিলে বরিশাল পরিবহন সেক্টরে মূর্তিমান আতংক হয়ে উঠেছে ট্রাফিক পুলিশের দুর্নীতিবাজ সার্জেন্ট কিবরিয়া।
সাইদুল ইসলাম নামক মটর সাইকেল চালক সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সার্জেন্ট কিবরিয়া তার গাড়িটি থামিয়ে কাগজপত্র দেখতে চান। কাগজপত্র দেখানো হলেও তার কাছে ৩ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এরপর ২ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাড়া পান তিনি। টাকা না দেয়া হলে ভারি মামলায় দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
একই অভিযোগ ইব্রাহিম ও খালিদ নামের দুই মটর সাইকেল চালকের। তারা বলেন, একটি গাড়ি দিনে কয়েকবার করে আটক করেন ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট কিবরিয়া। গাড়ি আটক করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। একটি গাড়ি বার বার আটক করে বার বার টাকা আদায় করার কারণে অতিষ্ট হয়ে তাদের সাথে ওই সার্জেন্টের কথা কাটাকাটি হয়।
গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে বরিশাল ফলপট্রি চৌমাথায় এমনি ভাবে কয়েকজন সংবাদকর্মীর গাড়ি থামায় সার্জেন্ট কিবরিয়া। এসময় তার সাথে থাকা এসআই আসলাম সংবাদকর্মীদের কাগজপত্র দেখে তাদের যেতে বললেও কিবরিয়া কিছু দাবি করেন। না দিলে গাড়িগুলো ছাড়া যাবে না বলে জানান তিনি। এ নিয়ে সংবাদকর্মীদের সাথে কথা কাটাকাটি হয় কিবরিয়ার। এক পর্যায় তিনি বরিশালের সব সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি তাৎণিক সংবাদকর্মীদের প থেকে ট্রাফিক পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপকে অবহিত করলে তাদের ফোন পেয়ে সংবাদকর্মীদের গাড়ি ছেড়ে দেন কিবরিয়া।