বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ গাইবান্ধার ওপর দিয়ে রবিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে প্রায় ঘন্টাব্যাপী কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। বৃষ্টিহীন এ ঝড়ে গাছ চাপায় চার নারীসহ ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত হয়েছে।
নিহতরা হচ্ছেন, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের বাকেরপাড়া গ্রামের ইউনুছ আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০) ও একই ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আবদুল গফফার (৪২), গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ী ইউনিয়নের ঢনঢনিপাড়া গ্রামের মিঠু মিয়ার স্ত্রী সাহারা বেগম (৪১) ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত হলদিয়া গ্রামের সোলায়মান আলীর স্ত্রী ময়না বেগম (৪৭) এবং ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের বিশু মিয়ার স্ত্রী শিমুলি বেগম (২৬)। এ ছাড়া ঝড়ে কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রবিবার বিকেল তিনটার দিকে হঠাৎ বৃষ্টিহীন কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। এ সময় পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের ডাকেরপাড়া গ্রামের জাহানারা বেগম বাড়ির উঠানে সাংসারিক কাজ করছিলেন। এক পর্যায়ে বাড়ির একটি গাছ উপড়ে পড়ে। এতে গাছের নিচে চাপা পড়ে জাহানারা ঘটনাস্থলে মারা যান। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আবদুল গফফার মোস্তফাপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বাড়ির কাছাকাছি পৌছলে একটি গাছ উপড়ে তার শরীরের ওপর পড়ে। এতে তিনি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
পলাশবাড়ী থানার ওসি মো. মাসুদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঝড়ের সময় গাছ চাপায় তারা মারা যান। বেলা সোয়া তিনটার দিকে কিশামত হলদিয়া গ্রামের ময়না বেগম বাড়ির আঙ্গিনায় কাজ করছিলেন। এসময় বাড়ির একটি গাছ ভেঙ্গে পড়লে তিনি এর নিচে চাপা পড়ে মারা যান। ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান গাছ চাপায় ওই নারী নিহত হবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বেলা পৌনে চারটার দিকে ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের বিশু মিয়ার স্ত্রী শিমুলি বেগম একইভাবে বাড়ির উঠানে কাজ করার সময় গাছ চাপায় মারা যান।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ঝড়ে উড়ে আসা টিনের আঘাতে রবিউল ইসলাম রবি (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার আল্লারদর্গা দফার ফিলিং স্টেশনের কাছে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত রবিউল ইসলাম উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের শশীধরপুর গ্রামের সাদ মন্ডলের ছেলে। তিনি স্থানীয় বাজারে কাঁচা মালের ব্যবসা করতেন।
রবিউলের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রবিউল কুষ্টিয়া থেকে পেঁয়াজ কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে ঝড়ের কবলে পড়লে আল্লারদর্গা বাজারের পাশে দফাদার ফিলিং স্টেশনের কাছে এসে আশ্রয় নেন। এ সময় প্রচণ্ড ঝড়ে পাশের চালা থেকে আচমকা একটি টিন উড়ে এসে রবিউলের ঘাড়ের পেছনে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে ঘটনাস্থলেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এসময় স্থানীয়রা তাকে দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দৌলতপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহাদত হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই স্বজনরা তাকে কুষ্টিয়া নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।