কঠোর বিধি-নিষেধ উপেক্ষা, ঈদের দিনে রাজধানীতে মানুষের ঢল

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারের ঈদেও ছিল কঠোর বিধি-নিষেধ। ঈদগা মাঠে নামাজের অনুমতি দেয়নি সরকার। কিন্তু চলমান বিধি নিষেধ হয়তোবা আর মানতে চায় না সাধারণ মানুষ। তাই তো করোনার ভয় উপেক্ষা করে ঈদের দিনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আজও ঘুরতে বেরিয়ে ছিল হাজার হাজার মানুষ।

রাজধানীর সড়কগুলোতে দুপুরের পর থেকেই হাজার হাজার মানুষের চলাচল দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা মাস্কও ছিল না অনেকের মুখেই।

শুধু তাই নয়, ঈদের দিন রাজধানীর আগারগাও, মোহাম্মদপুর, মানিক নিয়া এভিনিউসহ বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট মেলাও বসেছিল। এসব স্থানে বাচ্চাদের নানা রকমের খেলনা, চুরি, আইসক্রিম, ঝালমুড়ির দোকান।

বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোট শিশুরাও বেরিয়ে ছিল ঈদের দিন ঘোরাঘুরি করতে। রাজধানীর মিরপুর, আগারগাও, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এসব দৃশ্য দেখা গেছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের সামনের বিশাল সড়ক জুড়েই ছিল হাজার হাজার মানুষ।

কেউ স্ত্রী সন্তান, কেউ বাবা মা, কেউ বা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছে এই সড়কে। ছোট ছোট অনেক খেলনার দোকানও ছিল সেখানে। ছিল আইসক্রিম ও ফুসকার দোকানও।

তবে সবকিছু থাকলেও শুধু ছিল না স্বাস্থ্যবিধি। অনেকেই ছিলেন মাস্কবিহীন, কারও কারও মুখে মাস্ক ঝোলানো ছিল তবে নাক, ঠোঁট ছিল খোলা।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে মানিক নিয়া এভিনিউতেও হাজার হাজার মানুষের উপস্থিত চোখে পড়েছে। সেখানেও রয়েছে নানা রকমের দোকানপাট। শত শত গাড়ি পার্ক করা ছিল মেইন রোডের ওপরেই। এতে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল নিম্নবিত্ত, উচ্চবিত্ত সকল মানুষেরাই এসে জমা হয়েছিল সেখানে। এত মানুষের ভিড়ে সড়কের পাশে দিয়ে হাঁটার মতো অবস্থা ছিল না সাধারণ পথচারীদের।

মুখের মাস্ক খুলে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আইসক্রিমের দোকানে, ঝালমুড়ির দোকানে খাচ্ছিলেন অনেক মানুষ। ক্রেতা-বিক্রেতা কারও মুখেই মাস্ক নেই। অবশ্য এত মানুষের মধ্যে এমনিতেই গরমে মুখে মাস্ক রাখাটা বেশ কঠিন।

এত মানুষের চাপে ‘সামাজিক দূরুত্ব’ শব্দটি হয়তোবা ভুলেই গিয়েছিলেন সবাই। এছাড়াও ঈদের দিনে ঘুরতে বের হওয়া মানুষকে আনন্দ দিতে ঘোড়ার গাড়ি নিয়েও হাজির গাড়িওয়ালা। সেই গাড়িতে শখের বসে একটু আনন্দ পেতে পরিবার, প্রিয়জন নিয়ে উঠেছিলেন অনেকেই।

এভাবেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছে হাজারও মানুষ। করোনার ঝুঁকি নিয়ে ঈদের একটু আনন্দ উপভোগ করতে। অবশ্যই সড়কের বিভিন্ন এলাকাগুলোতেই পুলিশ,র‍্যাবসহ  অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। কিন্তু চোখে পড়েনি স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য কারও কোনো তৎপরতা।

উল্লেখ্য, চলামান এই লকডাউন’ বা বিধি-নিষেধ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িছে সরকার। বিধি-নিষেধ অনুযায়ী, পুলিশ, সিটি করপোরেশন ও ম্যাজিস্ট্রেট দেশের প্রত্যেক মার্কেট ও এলাকায় সুপারভাইজ করবেন। যদি কোনো মার্কেটে বা কোথাও মাস্ক ছাড়া যদি লোকজন ঘোরাফেরা করে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বা জরিমানা করা হবে।

এছাড়াও ৬ মে থেকে গণপরিবহন জেলার ভেতরে চলাচল করতে পারবে বলেও জানানো হয়েছে। আন্তঃজেলা চলাচল করবে না। লঞ্চ ও ট্রেনও সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ রয়েছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

Related Posts