বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ মাদক নির্মূলে দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দিয়ে বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ ফয়েজী উদ্দীন বলেছেন, আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন থাকতে পারে, ধর্মীয় ভাবেও আমরা একেকজন একেক ধর্মের অনুসারী হতে পারি। কিন্তু সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদককে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
শনিবার (২৬ জুন) শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে অনন্যা সোস্যাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে “মাদকের অপব্যবহার ও পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস” উপলক্ষে “মাদকের ভয়াল থাবা থেকে যুব সমাজকে রক্ষায় আমাদের করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভা ও অনন্যা পার্সোনালিটি এ্যাওয়ার্ড-২০২১ ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে জাতীয় সংলাপ প্রয়োজন। কারণ জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া মাদক নির্মূল সম্ভব নয়। সংলাপে সবাই যদি মনে করেন, মাদক দেশের এক নম্বর সমস্যা, তা হলে কঠোর হতে হবে। কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
ওব্যাট হেল্পপার্সের নির্বাহী পরিচালক সাবেরা সুলতানা সভাপতিত্বে ও সংগঠনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান খোকনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সের সচিব খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, কর্ণেল (অব:) মোকাররম আলী খান, ইঞ্জি: আহসান, সমাহারের নির্বাহী পরিচালক সালেহা আহমেদ, সংগঠনের উপদেষ্টা আলী আশরাফ শেখ, শেরে বাংলা পথকলি স্কুলের সভাপতি আর কে রিপন, অগ্রগামী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক গোলাম ফারুক মজনু সহ প্রমুখ।
পররাষ্ট্র সচিব রিয়াল এডমিরাল (অব:) মো: খোরশেদ আলম বলেন, মাদকের ভয়াল থাবা আমাদের যুব সমাজের দিকে দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। অথচ এই যুব শক্তিই দেশের উন্নয়নের চালিকা শক্তি। বর্তমান সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রয়োজন প্রত্যয়দীপ্ত, কর্মনিপুন, সুস্থ ও দক্ষ যুব সমাজ। এই যুব সমাজকে রক্ষাকল্পে মাদকের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে।
বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মাদক সমস্যা আজ বিশ্বব্যাপী প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। মাদকের কুপ্রভাব আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যে তরুণ প্রজন্ম আগামীতে দেশ ও জাতির হাল ধরবে তারাই আজ মাদকের ভয়াল থাবায় নিজের জীবনকে নষ্ট করছে। মাদক সমস্যা দূরীকরণে আমাদের সঙ্গবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সবাইকে হাতে হাত রেখে ঐকবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার সম্পর্কে সমাজের সর্বস্তরের জনসাধারণকে অবহিত করা, এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করে মাদকের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে গণজাগরণ সৃষ্টি করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
সভাপতির বক্তব্যে সাবেরা সুলতানা বলেন, মাদকাসক্তি একজন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি তার জীবনের সকল সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়। যে পরিবারে একজন মাদকাসক্ত রয়েছে সে পরিবারের দুঃখ-দুর্দশা অন্তহীন। মাদকাসক্ত এই তরুণরা জাতির ভবিষ্যৎ না হয়ে ক্রমশ বোঝা হয়ে পড়ছে। তাই মাদকাসক্তি মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সকলের সম্মিলিত প্রয়াস অপরিহার্য।
অনুষ্ঠান শেষে সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য পররাষ্ট্র সচিব রিয়াল এডমিরাল (অব:) মো: খোরশেদ আলম, শিক্ষায় কর্ণেল (অব:) মোকাররম আলী খান, এনজিওতে সাবেরা সুলতানা সহ ৫ জনকে স্মারক সম্মাননা প্রদান করা হয়।