বানিয়ারচরের তুফান বিশ্বাস এর ৪০তম প্রয়াণ দিবস

বিশেষ প্রতিনিধি: ১২ জুলাই ২০২১ ছিল তুফান বিশ্বাস এর ৪০তম প্রয়াণ দিবস। যাকে স্থানীয়ভাবে ‘চল্লিশা’ বলা হয়। গত ৩ জুন তুফান বিশ্বাস বার্ধক্যজনিত কারণে পরলোকগত হন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বানিয়ারচর গ্রামের বাসিন্দা। তুফান বিশ্বাস ছিলেন এলাকার একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী কাঙ্গালী ভোজ ও জাতীয় শোক দিবস আয়োজক কমিটির স্থানীয় সভাপতি ছিলেন। যারা দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর যাবৎ নিজস্ব তহবিল গঠন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করে আসছেন।

প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসরণ করে আজ রোজ সোমবার দিনব্যাপী বিশ্বাস-বাড়িতে তার আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও পাড়া-প্রতিবেশীদের সমন্বয়ে বিশেষ গান-প্রার্থনা ও স্মৃতিচারণ-সভার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু দেশের বর্তমান করোনার ভয়াল পরিস্থিতির কারণে এটা করা সম্ভব হয়নি। তবে যথাযত স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্পসংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে স্থানীয় ক্যাথলিক চার্চের যাজক ফাদার জার্মেইন সঞ্চয় গমেজের পৌরহিত্বে স্বর্গীয় তুফান বিশ্বাসের স্মরণে পবিত্র ‘খ্রীষ্টযাগ’ উৎসর্গ করা সহ তার আত্মার চির কল্যাণে বিশেষ প্রার্থনা-সভার আয়োজন করা হয়।

তুফান বিশ্বাস ছিলেন খ্রীষ্টধর্মের অনুসারী। তাই খ্রীষ্টধর্মের ঐতিহ্য অনুযায়ী মৃত্যুপরবর্তী ৪০ দিন মৃতব্যক্তির আত্মার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

স্বর্গীয় তুফান বিশ্বাসের তয় সন্তান নিকোলাস বিশ্বাস বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আমাদের প্রিয়তম পিতা (তুফান বিশ্বাস মহাশয়) তার অন্তিমযাত্রা সমাপণে প্রভুর রাজ্যে স্থান পেয়েছেন এবং এখন তার সঙ্গেই আছেন।

তিনি আরো বলেন, গত ৪০ দিন ধরে আমাদের গৃহে আমার স্ত্রী সীমা বিশ্বাসের উদ্যোগে প্রতিদিন সন্ধ্যায় স্বল্পপরিসরে আমার প্রয়াত পিতার আত্মার কল্যাণে গান-প্রার্থনা সহ রোজারিও মালা সম্পন্ন করা হয়েছে।

শ্রীমান তুফান বিশ্বাস ১৯২৮ সালের ৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারে তারা ছিলেন মোট চার ভাই। এদের মধ্যে তিনি ছিলেন মেঝো। তার বাবার নাম শ্রীমান বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস এবং মায়ের নাম শ্রীমতি অন্তি রাণী বিশ্বাস।

তুফান বিশ্বাস সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টে সর্বদা সমব্যাথী হওয়ার চেষ্টা করতেন এবং সাধ্যমত তাদের পাশে দাঁড়াতেন। গত বছর করনাকালীন সময়ে- মে, জুন ও জুলাই মাসগুলোতে তিনি তার সাধ্যমত পাড়া-প্রতিবেশীদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন এবং ত্রাণসামগ্রী দিয়েছেন। তিনি এলাকার জনকল্যাণমূলক কাজেও বিশেষ ভূমিকা রাখতেন। উল্লেখ্য যে, জলিরপাড় বঙ্গরত্ন (ডিগ্রী) কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য শুরুর দিকে তিনি আট শতক জমি দান করেন। এছাড়াও, তিনি এলাকার বেশ কয়েকজন ছেলেকে পড়াশুনার জন্য অর্থ সহায়তা দিয়েছিলেন।

Print Friendly

Related Posts