বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ প্রতিদিন কলকাতা-সহ ভারতের অন্যান্য শহরে বিক্রি হচ্ছে গাদা গাদা যৌন বলবর্ধক ওষুধ। প্রচলিত নামে ‘ভায়াগ্রা’। যদিও প্রকৃত ভায়াগ্রা আমেরিকার ফাইজার কোম্পানির তৈরি একটি ওষুধ। যার দামও তুলনায় অনেক বেশি। ওষুধে থাকা যৌগটির নাম ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’। ভারতে নির্মিত ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’ গোত্রের ওষুধের দাম তুলনায় অনেক কম। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আসল ভায়াগ্রার দশ ভাগের এক ভাগও নয়। আর তাতেই নির্দ্বিধায় এই ওষুধের দিকে ছুটছে একটা প্রজন্মের পুরুষ।
‘অল ইন্ডিয়া অরগ্যানাইজেশন অব কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস’ বা ‘এআইওসিডি’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বেড়েছে যৌন বলবর্ধক ওষুধের বিক্রি। ২০১০ সালে ভারতে এই ধরনের ওষুধের বাজারের আয়তন ছিল প্রায় ১৮০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালেই তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫৭ কোটি টাকায়। আর সেখান থেকেই চিকিৎসকদের অভিমত, একটা গোটা প্রজন্মের পুরুষ অন্য এক মহামারির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। যার নাম ভায়াগ্রা।
‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ বা ‘আইএমএ’-এর প্রাক্তন প্রধান কেকে অগ্রবাল মুম্বইয়ের এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘বহু রোগীই চান চিকিৎসকরা তাদের ‘ভায়াগ্রা’ গোত্রের ওষুধ দিন। কিন্তু পাশাপাশি এটাও চান না, সেটি প্রেসক্রিপশনে লেখা হোক। কারণ তাতে কাছের মানুষের কাছে সেই সব রোগীদের সম্মানহানীর আশঙ্কা থাকে। তারা দোকান থেকে এমনিই কিনে নেন এই জাতীয় ওষুধ।’’ বহু ক্ষেত্রেই ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’ গোত্রের ওষুধ কিনতে কোনও প্রেসক্রিপশন লাগে না। চেনা দোকান গিয়ে এমনি বললেই হয়।
গবেষণা বলছে, যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন, ভায়াগ্রা বা ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’ গোত্রের ওষুধ তাদের হৃদযন্ত্রের জন্য ভাল। কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া ভায়াগ্রার তেমন কোনও ক্ষতিকারক দিকও এখনও পর্যন্ত টের পাওয়া যায়নি। এর ফলে রক্তচাপ কিছুটা কমে যায়। তাই মদ্যপানের পরে এই জাতীয় ওষুধ খেলে শরীর খারাপ হতে পারে। এ তো গেল তাৎক্ষণিক বিষয়। কিন্তু দীর্ঘ দিন এই জাতীয় ওষুধ খেয়ে গেলে, যৌনসম্পর্কের চরম অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের। এমন নির্ভরতা তৈরি হতে পারে, যাতে এই ওষুধ ছাড়া সঙ্গম আর হয়তো সম্ভবই হবে না অনেকের ক্ষেত্রে। ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’ বিক্রি যে হারে বাড়ছে, তাতে একটা গোটা প্রজন্মের পুরুষের সঙ্গে এমন হতে পারে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের।
আনন্দবাজার অনলাইন