নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের টেক জায়ান্ট খ্যাত ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদ বলেছেন, আক্ষরিকভাবে বাংলাদেশে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির উন্নয়নে বিশেষ করে দেশের ইলেক্ট্রোনিক্স ম্যানুফ্যাচারিং সেক্টরে ওয়ালটন শোকেস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের দ্রুত বর্ধনশীল উন্নয়নের রূপকার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়কে ধন্যবাদ জানান তিনি।
শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় দেশের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পূঁজিবাজারের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং বাংলাদেশ স্টক এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলামকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের লস এ্যাঞ্জেলেস শহরের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের উইলশায়ার গ্রান্ড বল রুমে অনুষ্ঠিত রোড শো’র তৃতীয় পর্বের সমাপনীতে ধন্যবাদ জ্ঞাপনকালে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসব কথা বলেন।
লস অ্যাঞ্জেলসে স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার, ৩১ জুলাই ভোর সাড়ে ৬টা) তৃতীয় দিনের এ রোড শো শুরু হয়।
সমাপনী পর্বে ভোট অব থ্যাংকস বা ধন্যবাদ প্রস্তাবে গোলাম মুর্শেদ বলেন, বাংলাদেশ আসলে কি করছে, কতটা উন্নতি করেছে- সে বিষয়ে সম্যক ধারণা দিয়েছেন পূঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান। আক্ষরিক অর্থে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে উল্লেখ করে তা দেখতে বিদেশী এবং অনাবাসি বাংলাদেশীদের যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান তিনি।
ওয়ালটনের এমডি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা দেখে যে কারো আত্মবিশ্বাস বাড়বে। ইলেক্ট্রোনিক্স ম্যানুফ্যাচারিং সেক্টরে বাংলাদেশের উন্নয়নে ওয়ালটন শোকেস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভাবনীয় সফলতা দেখিয়েছে দেশ।
সেইসঙ্গে গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘আমি বলতে পারি যে, পাঁচ ভাইয়ের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ৭শ’ একরের বেশি জায়গাজুড়ে গড়ে উঠা ওয়ালটন কারখানা ঘুরে দেখলে আপনাদের আত্মবিশ্বাস আরো বাড়বে।’ ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার ধন্যবাদ প্রস্তাবে আরো বলেন, বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এজন্য তিনি সবাইকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা আহ্বান জানান।
শুক্রবার তৃতীয় দিনের কর্মসুচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন সালমান এফ রহমান। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ বি এম রুহুল আজাদ, বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এবং রোড শো’র সহযোগী পৃষ্ঠপোষক ইবিএল ও নগদকে ধন্যবাদ জানান গোলাম মুর্শেদ।
শেয়ার বাজারের উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তার ধন্যবাদ তালিকায় ছিলো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান স্পেল বাউন্ড।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি, বিনিয়োগ সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে যুক্তরাষ্ট্রের চারটি শহরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্যোগে এই রোড শো’র আয়োজন করা হয়েছে।
এর আগে নিউ ইয়র্কে গত ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় রোড শো’র প্রথম পর্ব। ২৮ জুলাই ওয়াশিংটন ডিসিতে ছিলো দ্বিতীয় পর্ব। ৩০ জুলাই তৃতীয় দিনের কর্মসুচিতে বিকাল ৫টা থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়। রেজিস্ট্রেশন শেষে সাড়ে ৫টায় শুরু হয় দিনের মূল কর্মসূচি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সেক্টর থেকে আগত অতিথিরা প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা এবং সরকারের গৃহীত বিনিয়োগবান্ধব নীতি আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হয়। এরপর ছিলো প্যানেল আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব।
‘দি রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব ট্রেড এবং ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ- শীর্ষক তৃতীয় পর্বের এ রোড শোতে লস অ্যাঞ্জেলসের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী এবং স্টেক হোল্ডাররা অংশ নেন । আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের শেয়ারবাজারের উন্নতি ও প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য এসব রোড শো’র আয়োজন করা হয়েছে। রোড শো’র চতুর্থ বা শেষ পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ২ আগস্ট, সিলিকন ভ্যালিতে।
#