পদবি বৈষম্য নিরসনে কালক্ষেপণ মানবে না সরকারি চাকুরিজীবিরা

সচিবালয়ের মতো পাবলিক সার্ভিস কমিশন, হাইকোর্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের প্রধান সহকারী, সহকারী, উচ্চমান সহকারীসহ সমপদগুলোকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। অথচ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তিনবার সুপারিশ করা স্বত্বেও সারা দেশের অন্যান্য সরকারী দফতরে সমপদে কর্মরত কর্মচারিগণ আগের পদবি ও বেতন স্কেলে রয়ে গেছে।

সংবিধান বিরোধী বৈষম্য দূর করার দাবিতে শুক্রবার বিকাল ৩:০০ ঘটিকায় ‘বাংলাদেশ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ’ এর উদ্যোগে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কে এম বদিউজ্জামান।

সভায় সংগঠনের মহাসচিব আবু নাসির খান আলোচ্য সূচির উপর স্বাগত বক্তব্যে বলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গঠিত উপকমিটি প্রতিবেদন দাখিল করলেও সরকারী কর্মচারীদের দাবী দাওয়া বাস্তবায়ন সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি সুপারিশ বাস্তবায়নে কালক্ষেপণ করে যাচ্ছে, যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। বাংলাদেশ সচিবালয়ের ভিতরে ও বাইরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, সহকারী ইত্যাদি পদের পদবি ও বেতন স্কেল এক ও অভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও তৎকালীন সরকার ১৯৯৫ সালের প্রজ্ঞাপন দিয়ে শুধু সচিবালয়ের বর্ণিত পদগুলো আপগ্রেড করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদবি পরিবর্তনসহ ১০নং গ্রেডে উন্নীত করে। ফলে সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে পদবি ও বেতনবৈষম্যের সৃষ্টি হয়। যার ধারাবাহিকতায় পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর বর্ণিত পদগুলোও আপগ্রেড করা হয়েছে, কিন্তু অন্যান্য দপ্তরের উল্লিখিত পদবিগুলো অদ্যাবধি পুর্বাবস্থায়ই রয়ে গেছে। অনতিবিলম্বে এই পদবি বৈষম্যের অবসান করতে হবে।

সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল হালিম বক্তব্যে বলেন দ্রুত আমাদের দাবীটি বাস্তবায়ন করা না হলে কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করা হবে। তিনি সকল কর্মচারি ভাইবোনদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

ইতোমধ্যে সরকার মাঠ প্রশাসনের (জেলা প্রশাসকের অফিস, বিভাগীয় কমিশনার অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস) বর্ণিত পদবি আপগ্রেড করার লক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ প্রেরণ করে। কিন্তু দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সংস্থা ও স্বায়ত্ব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বর্ণিত পদবির কর্মচারিদের প্রস্তাব/সুপারিশ একই সাথে না করা প্রশাসনে দ্বিতীয়বার বৈষম্যের সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, তাদের দাবীটি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে তারা কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে দাবী বাস্তবায়ন করা হবে।

এছাড়াও দাবীটি খুব দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। সভায় বর্তমান কমিটি মেয়াদ পুনরায় এক বছর বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

অতপর কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সর্বজনাব মোঃ আব্দুল হালিম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মোহাম্মদ জাকির হোসেন ডাক বিভাগ, মোঃ বেলাল হোসেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মোঃ জাহিদুল ইসলাম খাদ্য অধিদপ্তর, মোঃ লুৎফর রহমান ডিএমপি, মোঃ ফারুক হোসাইন মালুম রাজউক, রেশমা পারভীন বিআরটিএ, মোঃ শাহাদত হোসেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মোঃ জাকির হোসেন কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, মোঃ আশিকুল ইসলাম ক্রীড়া পরিদপ্তর ও নুরুজ্জামান হাওলাদার ।

Print Friendly

Related Posts