জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী
করোনা মোকাবিলায় গোটা বিশ্বকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর বৈশ্বিক উদ্যোগের ঘাটতির বিষয়কে সামনে নিয়ে এসেছে কভিড-১৯ মহামারি। একই সঙ্গে এটি বৈশ্বিক সংহতি ও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপরও আলোকপাত করেছে। সর্বজনীন বিষয়গুলোয় বিশ্বকে অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। নতুন নতুন অংশীদারিত্ব ও সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে।
শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। করোনা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা সংকটসহ অন্যান্য ইস্যুতে ছয় দফা প্রস্তাব তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, কভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তুলতে সবার জন্য ন্যায়সংগত ও সাশ্রয়ী মূল্যে টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে টিকা প্রযুক্তি হস্তান্তর টিকার সমতা নিশ্চিত করার একটি উপায় হতে পারে। কভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে টিকার সর্বজনীন ও সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই তার নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করতে সদা প্রস্তুত।
করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোকে একযোগে কাজ করানোর ক্ষেত্রে জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বিভিন্ন অঞ্চলের সদস্য দেশগুলো এই জাতিসংঘের মঞ্চ থেকেই তা শুরু করতে পারে। তবেই সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উত্তরণের লক্ষ্যে একটি অর্থবহ সহযোগিতা অর্জন করতে পারব। এই ক্রান্তিলগ্নে জাতিসংঘই হোক সবার ভরসার সর্বোত্তম কেন্দ্রস্থল। আসুন, সেই ভরসাকে বাঁচিয়ে রাখার প্রত্যয়ে সবাই হাতে হাত মিলিয়ে একযোগে কাজ করি।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যা তার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বরাবরের মতো এবারও বাংলায় ভাষণ দেন।
ইউএনজিএর ৭৬তম অধিবেশন গত ১৪ সেপ্টেম্বর শুরু হয়। শতাধিক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান নীতিনির্ধারণী এ বৈঠকে সশরীরে অংশ নিচ্ছেন। ভাষণের শুরুতে ইউএনজিএর ৭৬তম অধিবেশনের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় মালদ্বীপের আবদুল্লাহ শহিদ এবং ৭৫তম অধিবেশনে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য বিদায়ী সভাপতি ভলকান বজকিরকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে এ নিয়ে ১৭ বার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার কথাও তুলে ধরেন তিনি।