প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সারাদেশের বেসরকারী সংগঠন ও সিভিল সোসাইটির সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় প্লাটফর্ম ‘এলায়েন্স ফর এফসিটিসি ইমপ্লিমেন্টেশন বাংলাদেশ (এএফআইবি) কর্তৃক শনিবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় রাজধানীর পুরানা পল্টন এএফআইবি কার্যালয়ে জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহ-২০২১ পালন উদ্বোধন করা হয়।
এবছর জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এই মূহুর্তে প্রয়োজন, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ’।
জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহ-২০২১ উদযাপন কমিটি’র আহ্বায়ক ও গ্রাসরুট পিপলস এওয়ারনেস ফর ডেভেলপমেন্ট (জিপিএডি) এর চেয়ারম্যান মো. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রদান করেন স্ব-জীব সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মো. আইনুল হক, জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড ওয়েলফেয়ার (জার) এর কোষাধ্যক্ষ অসিত রঞ্জন মজুমদার প্রমুখ।
তামাক সেবনের ফলে প্রতিবছর ১ লাখ ২৬ হাজারের অধিক লোক মৃত্যুবরণ করে এবং ৪ লাখের অধিক লোক পঙ্গুত্ব বরণ করে। এ অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব রোধে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আগামী ৯-১৫ অক্টোবর দেশব্যাপী ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করণের লক্ষ্যে ৭ দিন ব্যাপী নানা কর্মসূচীর আয়োজন করেছে এলায়েন্স ফর এফসিটিসি ইমপ্লিমেন্টেশন বাংলাদেশ (এএফআইবি)।
সম্প্রতি দেশে ই-সিগারেটের প্রচলন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে এখনো এর নিয়ন্ত্রণের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ই-সিগারেট বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রচলিত সিগারেটের চেয়ে এর ক্ষতিকর প্রভাব কম বলা হলেও এখনই এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী। এখনই নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ই-সিগারেটের সাথে নেশাজাতীয় অন্যান্য ক্ষতিকর দ্রব্যাদি সম্পৃক্ত করে আরও বিপদজনক করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এ সমূহ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইউরোপ-আমেরিকার মত দেশের ন্যায় ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরী অথবা বিদ্যমান আইন সংশোধনের মাধ্যমে ই সিগারেট নিয়ন্ত্রণ এখন সময়ের দাবী।
এ সকল নানা বিষয় নিয়ে প্রচলিত সিগারেট এবং ই-সিগারেটের ক্ষতিকর বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং এর ব্যবহার নিরুৎসাহিত করনে ৯-১৫ অক্টোবর জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, এবারের জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহের কর্মসূচীর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- ১২ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও লিফলেট বিতরন, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবীতে দেশব্যাপী গনস্বাক্ষর সংগ্রহ, ৯-১৫ অক্টোবর ধারাবাহিকভাবে বিভাগীয় শহর-জেলা-উপজেলায় র্যালীসহ লিফলেট বিতরণ কর্মসূচী, সারাদেশে পোষ্টার প্রদর্শন ও ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে জেলা পর্যায়ে স্মারকলিপি প্রদান, পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন নিবন্ধ প্রকাশ ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে টকশো, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে নানা কৌশল নির্ধারণে সিভিল সোসাইটির সমন্বয়ে গোলটেবিল বৈঠক/মত বিনিময় সভা প্রভৃতি।
একইসাথে তিনি ৯-১৫ অক্টোবর জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহকে সরকারি পর্যায়ে জাতীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।