খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি

বেশ কিছুদিন ধরে জ্বর কমছে না বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার। শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্যের একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাকে।

মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালের ১০২০৪ নাম্বার কেবিনে ভর্তি করা হয় বিএনপি চেয়ারপার্সনকে। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শে তার সিটিস্ক্যান ও ইকো টেস্ট করানো হয়েছে। বুধবার এসবের রেজাল্ট আসবে। এছাড়া আরও কয়েকটি টেস্ট করোনোর কথা রয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খালেদা জিয়ার শরীরে জ্বর আছে। জ্বরের মাত্রা ১০২ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে। জ্বর না কমার কারণ খুঁজছে মেডিকেল বোর্ড।

ওই চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর পর গাড়ি থেকে হুইল চেয়ারে করে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে নির্দিষ্ট কক্ষে নেওয়া হয়। সেখানে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তার সঙ্গে কথা বলেন। তার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে এক দফা বৈঠকও করেছে বোর্ড। তবে খালেদা জিয়া হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে নারাজ। তাকে কয়েকটি স্বাস্থ্য পরীক্ষার গুরুত্ব বুঝিয়ে হাসপাতালে রাখার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা।

চিকিৎসকদের পরামর্শেই বিএনপি চেয়ারপার্সনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই বিএনপি চেয়ারপার্সন অসুস্থ। শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি। মেডিক্যাল চেকআপের জন্য ম্যাডামকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এভার কেয়ার হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও হাসপাতাল চিকিৎসক মিলে একটি টিম তার চিকিৎসায় নিয়োজিত আছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার। তার সার্বক্ষণিক সেবায় নিয়োজিত আছেন ব্যক্তিগত স্টাফ রূপা ও গৃহপরিচারিকা ফাতেমা।

এর আগে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে গুলশানে খালেদা জিয়া নিজ বাসভবন ফিরোজা থেকে নিজের গাড়িতে চড়ে হাসপাতালে যান। এ সময় ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. আল মামুন ও তার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন। তার আগে দুপুরে বাসায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনে গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ তাকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়েছিল তার পরিবার। তবে সরকার বলেছে, সাময়িক মুক্তির শর্ত অনুযায়ী তাকে দেশে রেখেই চিকিৎসা দিতে হবে। ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস ও চোখের সমস্যায় ভুগছেন।

Print Friendly

Related Posts