ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে জরুরী পদক্ষেপ চেয়ে অবস্থান ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচী

তামাক সেবনের ফলে প্রতিবছর ১ লাখ ২৬ হাজারের অধিক লোক মৃত্যুবরণ করে এবং ৪ লাখের অধিক লোক পঙ্গুত্ব বরণ করে।

এ অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব রোধে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ৯-১৫ অক্টোবর দেশব্যাপী ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করণের লক্ষ্যে ‘জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহ-২০২১’ বাস্তবায়ন করছে এলায়েন্স ফর এফসিটিসি ইমপ্লিমেন্টেশন বাংলাদেশ (এএফআইবি)।

এ বছর জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এই মূহুর্তে প্রয়োজন, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ’।

সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত নানা কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ১২ অক্টোবর সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহ-২০২১ উপলক্ষ্যে অবস্থান ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচী আয়োজন করে সংগঠনটি।

জাতীয় তামাকমুক্ত সপ্তাহ-২০২১ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও গ্রাসরুট পিপলস এওয়ারনেস ফর ডেভেলপমেন্ট (জিপিএডি) এর চেয়ারম্যান মোঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রোগ্রামের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন এএফআইবি’র যুগ্ম সমন্বয়ক ও নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এনডিএফ) এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা।

আরো উপস্থিত ছিলেন পল্লী সেবা সোসাইটি (পিএসএস) এর নির্বাহী পরিচালক কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন, স্বচ্ছ ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মোঃ আশরাফুল আলম, মাদকদ্রব্য ও নেশা বিরোধী কাউন্সিল (মানবিক) এর তামাক নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মোঃ নাসির উদ্দিন হিউম্যান ওয়েলবিয়িং ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ ওয়ারেস আলী, জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড ওয়েলফেয়ার (জার) এর কোষাধ্যক্ষ অসিত রঞ্জন মজুমদার, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন ইশা, বাংলাদেশ ন্যাপ পার্টির মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সম্প্রতি দেশে ই-সিগারেটের প্রচলন ক্রমেই বেড়ে চলেছে। উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে এখনো এর নিয়ন্ত্রণের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ই-সিগারেট বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রচলিত সিগারেটের চেয়ে এর ক্ষতিকর প্রভাব কম বলা হলেও এখনই এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী। এখনই নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ই-সিগারেটের সাথে নেশাজাতীয় অন্যান্য ক্ষতিকর দ্রব্যাদি সম্পৃক্ত করে আরও বিপদজনক করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

এ সমূহ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইউরোপ-আমেরিকার মত বিভিন্ন দেশের ন্যায় ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরী অথবা বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে ই সিগারেট নিয়ন্ত্রণ এখন সময়ের দাবী।

বক্তারা জরুরীভাবে ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নিম্নলিখিত সুপারিশসমুহ প্রদান করেন- যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অন্যান্য উন্নত দেশের ন্যায় সঠিক নীতিমালার মাধ্যমে ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ করা অথবা প্রচলিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া; আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণায় প্রচলিত সিগারেটের চেয়ে ই-সিগারেট ৯৫% কম ক্ষতিকর হলেও ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়তে ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ করা; উচ্চহারে শুল্ক-কর বৃদ্ধির মাধ্যমে ই-সিগারেট আমদানি বা উৎপাদন নিরুৎসাহিত করা; অবৈধ পথে বা চোরাচালানের মাধ্যমে ই-সিগারেট আমদানি বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি প্রদান করা; নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ই-সিগারেটের অবৈধ বাজারজাতকরণ কার্যক্রম বন্ধ করা।

Print Friendly

Related Posts