আহছানউল্লাহ থেকে ৫ ব্যাংকের প্রশ্ন ফাঁস, গ্রেপ্তার ৫

পাঁচটি ব্যাংকের ‘অফিসার ক্যাশ’ পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় চক্রের মূলহোতা মো. মুক্তারুজ্জামান রয়েলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রয়েল আহছানউল্লাহ ইউনির্ভাসিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে আইসিটি টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত। তার মাধ্যমেই বিশ্ববিদ্যায়টিতে কর্মরত অন্যদের সহায়তায় ওই পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

বুধবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পাঁচটি ব্যাংকের ‘অফিসার ক্যাশ’ পদে ১৫১১টি শূন্য আসনে নিয়োগ পরীক্ষা হয় গত শনিবার। আহছানউল্লাহ ইউনির্ভাসিটির মাধ্যমে ব্যাংকার সিলেকশন কমিটি পরীক্ষাটি সম্পাদন করে।

হাফিজ আক্তার জানান, গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের জোনাল টিম তথ্য পায় পরীক্ষা শুরুর আগেরদিন রাতে প্রশ্ন ফাঁস হতে পারে। পরে ডিবির এক সদস্য ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সেজে পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পেতে চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

চক্রের সদস্য রাইসুল ইসলাম স্বপনকে অগ্রিম টাকা দিলে পরীক্ষার্থীকে বুথে নিয়ে যান। এ সময় উত্তরপত্রসহ তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। স্বপনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার সাভারের শ্রীনগর থেকে রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে আলম মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর জানে আলমের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর দক্ষিণ বাড্ডা থেকে মো. শামসুল হক শ্যামলকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁস করার কথা স্বীকার করেন শ্যামল। পরে চক্রের মূল হোতা মো. মুক্তারুজ্জামান রয়েলকে বাড্ডার আলিফনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রয়েল প্রশ্ন ফাঁসের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার।

আসামিদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, পাঁচটি মোবাইল, চারটি প্রশ্নপত্র, চারটি উত্তরপত্র। হোয়াটসঅ্যাপে থাকা উত্তরপত্রের ছবি, একটি প্রবেশপত্রের ফটোকপি ও নগদ ছয় লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

আসামিরা জানিয়েছেন, রাজধানীর বাড্ডা, বসুন্ধরা, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, কল্যানপুর, রূপনগর, মিরপুর, মাতুয়াইল, শেওড়াপাড়া, শেরেবাংলানগর, পল্লবী এলাকায় বুথ  স্থাপন করা হয়। এসব বুথে পরীক্ষার পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন ও উত্তরপত্র মুখস্থ করানো হয়। চক্রের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে প্রত্যেক বুথে ২০ থেকে ৩০ জন পরীক্ষার্থী উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষার কেন্দ্রে যান।

আসামি মুক্তারুজ্জামান ও শ্যামল কৌশলে তিনবার বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর ফাঁস করেছে। তারা পরীক্ষার পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তরপত্র পৌঁছে দেন। এজন্য নিয়োগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে পাঁচ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন তারা। আসামিদের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts