বীরশ্রেষ্ঠ নূরের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী

দেশের সাত বীরশ্রেষ্ঠ’র একজন ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ। মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গণের এই সাহসী সন্তানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ।

এই বীরশ্রেষ্ঠ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মা জেন্নাতুন্নেছা। শৈশবেই বাবা ও মাকে হারান এই বীরশ্রেষ্ঠ।

মহিষখোলা গ্রামের নাম এখন পাল্টে গেছে। ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ বীরশ্রেষ্ঠ’র নামে গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে ‘নূর মোহাম্মদ নগর’। এরপর উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে এই গ্রামটির চিত্র।

এই বীরশ্রেষ্ঠ’র স্মরণে এখানে গড়ে উঠেছে- ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’, ‘স্মৃতিস্তম্ভ’, ‘স্কুল এবং কলেজ’ এবং নড়াইল শহরে ‘স্টেডিয়াম’। প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো বিস্তারে এবং খেলাধূলা চর্চার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে এসব প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া নূর মোহাম্মদ নগরে এই বীরশ্রেষ্ঠ’র নামে ব্যক্তি ও সামাজিক উদ্যোগে বিভিন্ন ধরণের ক্লাব ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

নূর মোহাম্মদ শেখ পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদানও করেন ২৬ ফেব্রুয়ারি (১৯৫৯ )। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরে ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যশোরের কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এসএ মঞ্জুর। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন নূর মোহাম্মদ। যশোরের কাশিপুর গ্রামেই তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন।

বীরশ্রেষ্ঠ’র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার জন্মস্থান নূর মোহাম্মদ নগরে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট ও জেলা প্রশাসন।

 

Print Friendly

Related Posts