বাগেরহাটের পদ্মনগরে একগম্বুজের নান্দনিক মসজিদ

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার পদ্মনগরে নির্মিত নান্দনিক ডিজাইনের আধুনিক মসজিদ কমপ্লেক্স নজর কাড়ছে মানুষের।একগম্বুজ বিশিষ্ট্ এই মসজিদের সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ সবাই।

পদ্মনগর গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সরদার জাহিদুল ইসলামের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ইজারা পদ্মনগর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ নামের এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। দুই তলা বিশিষ্ট মসজিদের অভ্যন্তরে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

শুক্রবার (১ এপ্রিল) জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে এই মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের নায়েবে আমীর শাইখুল হাদীস পীরে কামেল আল্লামা মুফতি মনসুরুল হক। এসময় বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নকিব নজিবুল হক নজু, বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি লিয়াকত হোসেন লিটন, কচুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজ শিকদার, ইজারা পদ্মনগর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সভাপতি সরদার বজলুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সরদার জাহিদুল ইসলাম, খাদেমুল ইসলাম পদ্মনগর মাদরাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মুফতি মাওলানা ইমরান হোসাইন, ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম খোকনসহ স্থানীয় দুই সহস্রাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। জুমার নামাজ শেষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসা মুসল্লীদের দুপুরের খাবার দেওয়া হয়।

মসজিদের জমিদাতা ও বর্তমান সভাপতি সরদার বজলুর রহমান জানান, ইজারা ও পদ্মনগর দুই গ্রামের প্রধান মসজিদ এটি। দীর্ঘদিন এলাকার মানুষ এখানে নামাজ পড়তেন। মূল মসজিদটি অনেক পুরানো হয়ে যাওয়ায় ২০১৮ সালে তার ছেলে ব্যবসায়ী সরদার জাহিদুল ইসলাম সকলের সম্মতিতে এখানে আধুনিক মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেন। অর্ধশতাধিক শ্রমিকের তিন বছরের চেষ্টায় মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।

আধুনিক এই মসজিদটির নকশা করেছেন বিল্ডিং ডিজাইনকারী প্রতিষ্ঠান রাশেদুল হাসান অ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটেস-এর স্বত্বাধিকারী স্থপতি রাশেদুল হাসান। মসজিদের মূল ভবনের সামনে রয়েছে প্রশস্ত জায়গা, প্রাকৃতিক আলো-বাতাস প্রবেশের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। মেঝে করা হয়েছে মার্বেল পাথর দিয়ে। মূলভবনের তিন পাশে লোহার গ্রিল দেওয়া হয়েছে। মসজিদের মেহরাব করা হয়েছে কাবার আদলে। মসজিদের পূর্ব এবং উত্তর পাশে রাস্তা এবং পশ্চিম পাশে পদ্মনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ এবং দক্ষিণ পাশে রয়েছে কবরস্থান। পূর্বপাশে রাস্তার ওপারে ইসলামী পাঠাগার ও অজু খানা। মসজিদের অদূরে করা হয়েছে খাদেমুল ইসলাম পদ্মনগর মাদরাসা ও এতিমখানা। যেখানে হিফজ, কিরআত ও কওমি শিক্ষা চালু রয়েছে। বর্তমানে মাদরাসাটিতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।

মসজিদ নির্মানের প্রধান মিস্ত্রি মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, ৫০ বছরের উপরে আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। কিন্তু এই ধরনের আধুনিক ডিজাইনের কাজ এই প্রথম করলাম। আমার আগে অনেক মিস্ত্রি এই ডিজাইন দেখে কাজ করতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি ভালভাবে কাজটি করার। আল্লাহর রহমতে কাজটি ভাল হয়েছে। কাজ দেখে সবাই খুশি হয়েছেন।

স্থানীয় শহিদুল ইসলাম, টুটুল, গনি শেখসহ কয়েকজন বলেন, এত সুন্দর মসজিদ আমরা কখনও দেখিনি। ইতোমধ্যে আমাদের এই মসজিদ দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসা শুরু করেছে। আমরা খুবই খুশি হয়েছি, এখানে এত সুন্দর মসজিদ নির্মাণ হওয়ায়।

 

Print Friendly

Related Posts