বান্দরবান প্রতিনিধি: দুই বছর পর করোনার বাধা না থাকায় পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠেছে পাহাড়। ঈদের দিন থেকে অঝোরে বৃষ্টি হলেও তা উপেক্ষা করে পাহাড়ে সমৃদ্ধ বান্দরবানে ঢল নেমেছে পর্যটকের।
বান্দরবানে পাহাড়-পর্বত ছাড়াও এখানে রয়েছে অসংখ্য ঝিরি-ঝর্ণা, মেঘলার লেক, স্বর্ণমন্দির, নীলাচল, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, নাফাকুম, রেমাক্রি, চিম্বুক, নীলদিগন্তসহ সরকারী-বেসরকারী অনেকগুলো পর্যটন স্পট। আর এসব দর্শনে ঈদের টানা ছুটিতে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকের পদভারে এখন মুখর হয়ে উঠে বান্দরবান। এ কারণে পুরো শহর জুড়েই এখন উৎসবের আমেজ। পর্যটকের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজ, রেস্ট হাউজ কতৃপক্ষকে। অন্যদিকে পর্যটনশিল্প সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে।
বান্দরবানের নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণে আসা পর্যটক সালমা আক্তার জানান, সবুজ বনানী ঘেরা পাহাড়ের এই
বান্দরবান সত্যিই অসাধারণ। অরণ্যে ঘেরা পাহাড়ের সঙ্গে মারমা, মুরুং, ত্রিপুরা, বম, তংচঙ্গ্যা, চাকমা, চাক, খেয়াং, খুমী, লুসাই, কুকি, পাংখো এসব আদিবাসীদের সরল জীবনযাপন মুগ্ধ করছে আমাদের।
ঈদকে কেন্দ্র করে জেলার পর্যটন কেন্দ্র নীলাচল, মেঘলা, প্রান্তিক লেক, শৈলপ্রপাত, নীলগীরি, চিম্বুক পাহাড়সহ প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় যেন বেড়েই চলেছে।
বান্দরবানের মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রে বেড়াতে আসা পর্যটক আনিসুর রহমান রুবেল বলেন, বান্দরবানের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বেড়াতে ভালো লাগে। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে প্রায়ই ভ্রমণে আসি এবং পাহাড়, নদী আর ঝর্ণার পাশে থেকে সময় কাটাই।
নাগরিক জীবনের ছকে বাঁধা সময় থেকে বেরিয়ে যে কেউ এখানে হারিয়ে যেতে পারেন নীলাচলের মেঘে ঢাকা পাহাড়ে, মেঘলা লেকের সচ্ছ জলে ভাসাতে পারেন ডিঙ্গি নৌকা অথবা ঘুরে আসতে পারেন চিম্বুক পাহাড়ে। আর নীলগীরির অপরুপে যানজট ও কোলাহল মুক্ত পরিবেশে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে অনেকেই এই বান্দরবানে ছুটে আসেন।
বান্দরবানের হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঈদের টানা ছুটিতে এবার পর্যটকের বেশ উপস্থিতি রয়েছে। এ বছর ঈদে অনেক পর্যটক আসছে দেখলাম। আশা করি আগামীতে আরো পর্যটক এই জেলায় আগমন করবে।
বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রায় ৫৫টি হোটেল-মোটেলে আগামী শনিবার পর্যন্ত পর্যটকের আগমন অব্যাহত থাকবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ বান্দরবান জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ভ্রমন করতে পারে সে লক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বান্দরবান এসে কোনো পর্যটক যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন সেই দিকে আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি।