‘কবুতর’ কাঁধে নিয়ে ছুটছেন এক পুলিশ সদস্য

শখের বশে কবুতর পোষেন অনেকেই। কবুতরকে নানা বুলি ও ক্রিয়াকলাপ শেখানো নিয়ে মেতে ওঠেন। ঠিক তেমনি কবুতরের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন সাইফুল ইসলাম নামের একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানায় সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত। তিনি তার পোষা কবুতরকে এতটাই বশ মানিয়েছেন যে, যা দেখে মানুষ রীতিমতো অবাকই হচ্ছেন। তিনি যেখানেই দায়িত্ব পালন করতে যান কাঁধে করে কবুতরটিকেও সঙ্গে নিয়ে যান। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের সঙ্গে কবুতরও দায়িত্ব পালন করছে।

কবুতরপ্রেমি সাইফুল ইসলাম দেলদুয়ার থানায় যোগ দিয়েছেন মাত্র ৯ মাস। তিনি জানান, দেড় বছর আগে তার এই কবুতর পালনের শখ হয়। সেই শখ থেকেই তিনি তার ঢাকা জেলার ধামরাই থানার বাড়িতে কবুতর পালন শুরু করেন। রেসার জাতীয় কবুতরই পালনে তিনি আগ্রহী হন। তার কাছে রয়েছে মাক্সি রেসার, সবজী রেসার ও ডিজেল রেসার কবুতর। বর্তমানে তার কবুতর সংখ্যা ১৭ জোড়া।

সাইফুল জানান, দেলদুয়ার থানায় যোগদানের পর গত তিন মাস হলো এই মাক্সি রেসার কবুতরটি পালন শুরু করেন তিনি। তার বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা মাক্সি রেসার প্রজাতির কবুতরের একটি ডিম দেলদুয়ার থানার পাশের স্থানীয় এক কবুতর ব্যবসায়ীর প্রজেক্টে দেন। সেই ডিম থেকেই এই কবুতরটির জন্ম হয়েছে। বর্তমানে কবুতরটির বয়স প্রায় তিন মাস। পুরুষ এই কবুতরটি এখনও বাচ্চা, ছয় মাস বয়স হলে এটি সম্পূর্ণ রেসের উপযুক্ত হবে।

তিনি জানান, এরইমধ্যে কবুতরটি তার এতই পোষ মেনেছে যে, সে তার হাতের খাবার ছাড়া অন্য কোন খাবার খায় না। তার কাঁধে চড়ে কবুতরটি ঘুরে বেড়ালেও পোশাকে মলত্যাগ খুবই কম করে। তারও কবুতরটি নিয়ে ঘুরতে বেশ ভালো লাগে। সজোরে মোটরসাইকেল চালালেও তার কাঁধের উপর অটুট বসে থাকে। স্থানীয়রাও তাকে দেখে আনন্দ পায়। এছাড়া থানা কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে কোনো আপত্তি করেননি। তারাও কবুতরটি খুব পছন্দ করেন।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দিনের বেলায় ডিউটি পালনকালে কবুতরটিকে কাঁধে বা মোটরসাইকেলে বসিয়ে রাখলেও রাতের বেলা কোয়ার্টারে ওকে ঘরে রেখে দায়িত্ব পালন করি। কবুতরটিকে রেজা, বাজরা (ঘাসের বিচি), চিনা, কাউন, ছোলা, ডাবরি, গম, ভুট্টাসহ প্রায় ১৩ প্রকারের মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।

উপজেলার হিঙ্গানগর কলাবাগান গ্রামের রাশেদ খান বলেন, ওই পুলিশকে কবুতর কাঁধে নিয়ে ডিউটিরত অবস্থায় দেখা যায়। এটি দেখে সাধারণ মানুষ বেশ আনন্দ পায়। এ দৃশ্য দেখে আমার মনে হয় পুলিশের সাথে কবুতরও দায়িত্ব পালন করে।

জাঙ্গালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, এক সময় আমি নিজেও কবুতর পালন করতাম। বর্তমানে আমাদের গ্রামের অনেকেই কবুতর পালন করে। কবুতর যে পোষ মানে তা

কখনও আমার জানা ছিলো না। পুলিশ সাইফুলের কবুতর পালনের শখ আর কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো দেখে তা জানতে পারলাম। তাকে দেখে এখন স্থানীয় অনেক তরুণও কবুতর পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছির উদ্দিন বলেন, কবুতর পালন সাইফুলের একটি শখ। ওই শখ থেকেই তিনি কবুতরটি পোষেন। কবুতরটিও আমাদের খুব ভালো লাগে। কবুতর কাঁধে থাকলেও সঠিকভাবেই দায়িত্ব পালন করেন সাইফুল।

এআই/টি

Print Friendly

Related Posts