মোকাম্মেল হক মিলন, ভোলা: কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণ করেছেন ভোলায় খামারিরা। উন্নত মানের খাবার দিয়ে বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে তারা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন গরু। পশু খাদ্যের বাড়তি দামের মধ্যেও এবার লাভের আশা করছেন তারা।
প্রতি বছরের মতো এ বছরেও বিভিন্ন জেলাতে বিক্রি হবে ভোলার খামারিদের গরু। আর কোনোভাবেই যাতে রোগাকান্ত গরু বাজারে বিক্রি না হয়, সেজন্য ২১টি ভেটেনারি টিম বসানো হয়েছে। একইসঙ্গে এ বছর হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও চলবে গরু বিক্রি।
খামরিরা জানান, করোনা সংক্রমনের কারণে বিগত দুই বছর ধরে পশুর হাট তেমন জমেনি। এবার করোনার সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেশি লাভের আশায় খামারগুলোতে গরু মোটাতাজাকরণে প্রতিযোগিতা চলছে। জেলার প্রত্যন্ত এলাকার ছোট-বড় খমারগুলোতে এখন দেখা যাচ্ছে দেশি গরুর সমারোহ। তার মধ্যে বেশি দাম দিয়ে পশু খাদ্য কিনতে হলেও ভালো লাভের আশা করছেন খামারিরা।
ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের খামারি আসফিকুল আলম সুজন বলেন, খামারে ১৬টি গরু আছে। এর মধ্যে ১৪টি বিক্র করা হবে। এ বছর পশু খাবারের দাম বেড়েছে। তারপরেও গরু ভালো মোজাতাজা করেছি। আশা করছি হাটে বেশি দমে গরু বিক্রি করতে পারবো।
আরেক খামারি মনিরুল ইসলাম বলেন, পাঁচ বছর ধরে খামারে গরু পালন করে আসছি। বর্তমানে খামারে ২০টি গরু আছে। এর মধ্য আটটি গুরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছি। সেগুলোর মধ্যে দুইটি বড় সাইজের গরুর দাম তিন লাখ টাকা করে হাকানো হয়েছে।
চর চটকিমারা গ্রামের খামরি আবুল হোসেন বলেন, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর গরুর খাবারের দাম অনেক বেশি। তারপরেও হাটে গরুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে আমরা আশাবাদি।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রতি বছরই জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভোলার গরু বাইরেও বিক্রি হয়। এবারেও চট্টগ্রাম, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় গরু বিক্রি হবে। ইতোমধ্যে পশুর হাট বসা শুরু হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিত মন্ডল বলেন, এ বছর জেলায় ৯৭ হাজার গরুর চাহিদার বিপরীতে এক লাখ তিন হাজার গরু ও ছাগল সরবরাহ থাকবে। হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও ২০ হাজার গরু-ছাগল বিক্রির লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। গত বছর অনলাইনে ৯ কোটি টাকার গরু বিক্রি হয়েছিল।
এছাড়া ২১টি ভেটনাররি টিম গঠন করা হয়েছে। জেলায় দুই হাজার ৪৪৫টি বানিজ্যিক খামার ও ১৮ হাজার পারিবারিক খামারে পাঁচ লাখের বেশি গরু মজুদ আছে।