শাহীন রহমান: পাবনার ঈশ্বরদীতে কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে পৌর এলাকার অরণকোলা হাটসংলগ্ন বেশ কয়েকটি খামারে এবার গোলাপি মহিষের দেখা মিলেছে। ক্রেতাদের নজর কাড়ছে এই গোলাপি রঙের মহিষ।
এসব মহিষ কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে খামারে আসছেন ক্রেতারা। অনেকেই অনলাইনে দেখে গোলাপি রঙের মহিষ কিনে নিচ্ছেন। তবে এ রঙের মহিষ দেশে বিরল বলে জানা গেছে।
উপজেলার অরণকোলা এলাকার খামারগুলোতে তিন-চার বছর ধরে গোলাপি রঙের মহিষ পালন করা হচ্ছে। তবে এবারই প্রথম কোরবানির জন্য গোলাপি মহিষ বিক্রি করা হচ্ছে। বিরল প্রজাতির এ মহিষ দেখতে অনেকেই খামারে ভিড় করছেন।
সাড়ে তিন বছর ধরে গোলাপি রঙের মহিষ পালন করছেন অরণকোলা ওয়ান স্টপ ক্যাটল র্যান্স ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়া সোহান।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে কয়েকটি গোলাপি মহিষ বিক্রি হয়েছে। এখন দুটি মহিষ আছে। এ দুটিরও দরদাম চলছে। ১৪ মণ ওজনের মহিষটি পাঁচ লাখ টাকা দরদাম হয়েছে। আরেকটি গোলাপি মহিষ সাড়ে চার লাখ টাকা দাম বলেছে। আজকালের মধ্যেই মহিষ দুটি বিক্রি হয়ে যাবে।
আলো ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মাহাবুবুল আলম আলো জানান, তার খামারে দুটি গোলাপি রঙের মহিষ রয়েছে। এবার কোরবানিতে এগুলো বিক্রি করবেন। প্রতিদিনই ক্রেতারা এসে দরদাম করছেন। অনেকেই কৌতূহলবশত গোলাপি মহিষ দেখতে আসছেন। যে কোনো সময় এগুলো বিক্রি হয়ে যেতে পারে।
মামা কৃষি ফার্মের স্বত্বাধিকারী শামীম হোসেন জানান, সাড়ে তিন বছর আগে তিনি অরণকোলা হাট থেকে গোলাপি রঙের দুটি মহিষের বাছুর ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা কিনেছিলেন। এ মহিষের জাত সম্পর্কে তিনি জানেন না। মহিষ দুটি সাড়ে ৯ লাখ টাকায় তিনি বিক্রি করেছেন।
তিনি বলেন, এ মহিষ শান্ত প্রকৃতির। খাদ্যাভ্যাসের কোনো পরিবর্তন নেই। অন্যান্য মহিষ যা খায় এ মহিষও তাই খায়। শরীরের রঙ গোলাপি হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে এ মহিষের কদর বেশি।
ঈশ্বরদীর কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ডা. কাজী আশরাফুল ইসলাম জানান, সাধারণত মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে এ ধরনের মহিষ এদেশে আনা হয়। শখের বশে অনেকেই দু-চারটি করে পালন করছেন।
তিনি বলেন, এ মহিষ বাণিজ্যিকভাবে এখনো পালন শুরু হয়নি। এ মহিষের জাত বা প্রজননের বিষয়ে কেউ কখনো জানতেও আসেননি। গায়ের রঙ গোলাপি হওয়ায় এ মহিষের কদর বেশি মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়ের) পরামর্শক (কনসালটেন্ট) অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, গোলাপি বা সাদা রঙের মহিষ মিয়ানমারের জলাভূমি এলাকায় বেশি দেখা যায়। এগুলো কক্সবাজারের টেকনাফ হয়ে এদেশে আসে। গায়ের রঙ গোলাপি হওয়ায় এগুলো দেখতে বেশ সুন্দর। তাই কোরবানির ঈদে ক্রেতাদের কাছে এগুলোর চাহিদা বেশি মনে হচ্ছে। এসব মহিষের মাংস বেশ সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত বলেও জানান তিনি।