মোসলেম উদ্দিন: কয়েকদিনের তাপদাহে দিনাজপুরের মানুষ অস্থির। এক পশলা বৃষ্টির আশায় দিনাজপুর সদর উপজেলার রাজাবাটি হিরাবাগান এলাকায় বিয়ে দেওয়া হলো ব্যাঙ ভানু ও মতির।
এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই আয়োজনে কোনো কমতি ছিলো না। সাতপাকে বাঁধা, সিঁদুর দান, শুভদৃষ্টি, মালা বদল, গায়ে হলুদ, ধান-দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ প্রদান সহ ছিলো পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণ।
হিরাবাগান এলাকার রক্ষা কালী মন্দির প্রাঙ্গণে শুক্রবার (১৫ জুলাই) রাতে ব্যাঙ দুটির বিয়ে সম্পূর্ণ হয়। সেখানে আলপনায় সাজানো হয় একটি ছায়ামণ্ডপ। ঘট আর তার উপরে বসানো হয় একটি ডাব। ধান-দুর্বা সাজিয়ে রাখা হয় একটি কুলার মধ্যে। তার ঠিক পাশেই চালুনে জ্বলছিলো প্রদীপ।
দেখা যায়, একদিকে রান্না হচ্ছে বরযাত্রীদের খাবার। অন্যদিকে বাজছে ঢাক, কাসর আর শঙ্খ। আর সব আয়োজনই ছিলো দুটো ব্যাঙকে ঘিরে। বৃষ্টি কামনায় বরুণ দেবকে সন্তুষ্ট করতেই সনাতন ধর্মাবলম্বী এলাকাবাসীর এই আয়োজন।
গত দুই সপ্তাহ ধরে দিনাজপুর জেলাসহ আশে পাশের এলাকার উপর দিয়ে একটি মৃদু তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। নেই বৃষ্টিপাত। প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে সব। অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনপদের মানুষ। বিপর্যস্ত জনজীবন। অনাবৃষ্টির কারণে কৃষি কাজ বন্ধ প্রায়। আয়োজকদের বিশ্বাস, এমন বিয়ে দিলেই বরুন দেব সন্তুষ্ট হবেন। আর ধরীত্রিতে বর্ষণ করবেন বৃষ্টি।
এই বিয়েতে মেয়ে ব্যাঙ মতির মা ছিলেন আল্পনা মহন্ত আর ছেলে ব্যাঙ ভানুর মা ছিলেন সুমনা সরকার। মূল আয়োজক ছিলেন ছায়া অধিকারী। বিয়ের পুরোহিত ছিলেন নারায়ন চন্দ্র ঝাঁ।
আয়োজকরা বলেছেন, অনাবৃষ্টির কারণে সর্বপ্রথম ব্যাঙের এই বিয়ের প্রথা চালু করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতা শ্রী বিষ্ণুর অবতার ভগবান রামচন্দ্র। সনাতনরীতি মেনেই এখানে ব্যাঙ দুটির বিয়ে সম্পূর্ণ করা হয়েছে।