অপরূপ লাল শাপলার গ্রাম ‘নীলের পাড়া’

রেজাউল করিম: নয়নাভিরাম অপরূপ লাল শাপলার শোভা। দিগন্তজুড়ে যতোদূরে চোখ যায় মনে হয় লাল গালিচার কোন এক রাজ্য। শাপলার এমন সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে ছুটে আসেন হাজারো প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিয়াসী।

গাজীপুর শহর থেকে একটু দূরে সবুজ-শ্যামল ছায়ায় ঘেরা একটি গ্রাম নীলের পাড়া। এ গ্রামেই রয়েছে ছোট-বড় অনেক খাল-বিল। এসমস্ত বিলে বর্ষা এলেই ভরে যায় শাপলা। সব রঙের শাপলা থাকলেও লাল শাপলা বেশি। বিশেষ করে এই গ্রামের ‘পোড়াহারা’ বিলে শাপলা ফোটে বেশি।

রোদ ঝলমলে বিলের জলে প্রভাতে রঙ-বেরঙের শাপলায় মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। লাল শাপলার রঙিন পোশাক আর সাদা শাপলার দুধরঙা শুভ্রতায় প্রকৃতি এখানে ছড়িয়ে রেখেছে ভিন্ন এক রূপের বাহার। শাপলার বিছানো পাতায় শামুকের চুপিচুপি হেঁটে চলা আর ছোট ছোট মাছের আনাগোনা এনে দেয় ভিন্ন আমেজ।

এই গ্রামের প্রাণেশ চন্দ্র মন্ডল, বিকাশ চন্দ্রসহ অনেকেই বর্ষা মৌসুমে ভোরে ডিঙি নৌকায় বিলগুলো থেকে শাপলা তুলে বিক্রি করে থাকেন। খুব ভোরে সবাই শাপলা তুলতে যান। কেননা রোদের আলোয় শাপলা ফুল চুপসে যায়।

ভাওয়াল কলেজের শিক্ষার্থী হারুন অর রশিদ বলেন, শাপলার সৌন্দর্য আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে। প্রিয় মানুষটির খোঁপায় গুঁজে দিতে ইচ্ছে করে। এখানে ঘুরতে আসি প্রতিবছর। এখানে ঘুরতে এসেই গুনগুনিয়ে গাইতে থাকি ‘তুমি সুতোয় বেঁধেছো শাপলার ফুল, নাকি তোমার মন…’।

নীলেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গাজীপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডল মাধব চন্দ্র বলেন, আমাদের গ্রামটি আসলেই সুন্দর। গ্রামের আনাচকানাচে ফুটে থাকে অসংখ্য লাল শাপলা। শাপলা প্রজাতির মধ্যে প্রায় তিনটি প্রজাতিই এখানে দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে লালটাই বেশি মুগ্ধকর। তবে এবার বর্ষার পানি কম হওয়ার শাপলার বংশবৃদ্ধি একটু কম হয়েছে।

গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অন্ত্রিলা রাণী মন্ডল অঞ্জনা বলেন, আমাদের গ্রামটি শাপলা ফুলের জন্য পরিচিত। অনেকেই আসেন ঘুরতে, কেউ কেউ এসে ফুল নিয়ে চলে যান। রাতের আঁধারে ফুটে থাকা শাপলা সকালে দেখতে খুবই মায়াবি লাগে। লাল শাপলা আরও মনোমুগ্ধকর।

Print Friendly

Related Posts