মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর: তেলের দাম বাড়ায় দিনাজপুরের বিরামপুরে কদর বেড়েছে গরু দিয়ে জমি চাষের। কালের স্রোতে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে গরুর হাল। ২০০০ সালের আগে কৃষকের জমি চাষের একমাত্র উপায় ছিলো গরুর হাল।
বর্তমান আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি আবিষ্কারে এসব পুরনো কৃষি কাজের হাতিয়ারগুলো হারিয়ে গেছে। ডিজেল চালিত পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর দিয়ে সহজেই কৃষক জমি তৈরি করছেন। এছাড়াও চারা রোপণসহ সব ফসল কাটা-মাড়াই ডিজেল চালিত মেশিন দিয়েই চলছে।
বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর ও মুন্সীপাড়ার কৃষক মুনসুর আলী আর মকবুল হোসেনকে নিজেদের জমিতে হালচাষ ও মই দিতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। এই কৃষি হাতিয়ারগুলো তাদের বাপ-দাদার আমলের, অনেক যত্নে তাদের স্মৃতি হিসেবে ধরে রেখেছেন তারা। বাড়িতে তাদের দুইটি করে হালের গরু রয়েছে। তেলের দাম হঠাৎ বাড়ায় ফসল ফলাতে ব্যয় হচ্ছে বেশি। তাই বাপ-দাদার রেখে যাওয়া সেই হালের গরু আজ কাজে লাগাচ্ছেন তারা।
মুনসুর আলী বলেন, লাঙলটি অনেক পুরাতন। দাদা এবং বাবা এই লাঙল দিয়ে জমি চাষ করে ফসল ফলিয়েছে। আমিও অনেক আগে এই লাঙল দিয়ে আবাদ করেছি। আধুনিক কৃষিযন্ত্র আসার পর এগুলো আর ব্যবহার করি না। কিন্তুু তেলের দাম বাড়ায়, যেহেতু বাড়িতে দুইটি হালের গরু আছে। সেই গরু দিয়ে আবারও জমি চাষ শুরু করেছি। সময় একটু বেশি লাগছে তাতে কোন সমস্যা নেই, তেলের তো আর প্রয়োজন হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আধুনিক কৃষিযন্ত্র দিয়ে দ্রুত জমি চাষ হয়। তবে লাঙল দিয়ে জমি চাষের গভীরতা বেশি হয় এবং ফলনও অনেক ভাল। বর্তমান আমাকে দেখে অনেকেই এই হালের গরু দিয়ে জমি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
মই দিতে ব্যস্ত ৬৫ বছর বয়সী মকবুল হোসেন বলেন, এখন তো আর আগের দিন নাই বাহে? ছোট বেলার অভ্যাস বাপে জমিতে মই দিলে মইয়ে বসে সুখ খাতাম। জমিও সমান হতো, মজাও পাওয়া যেতো। শীতকালীন সবজি লাগাবো, তেলের দাম বেশি তাই গরুর হাল দিয়ে জমি তৈরি করছি।