তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। এবার ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আজ দ্বিতীয় ম্যাচে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নামছে বাংলাদেশ।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরু হবে দুপুর ১২টায়। টি-স্পোর্টস ও গাজী টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করবে।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। যা ছিল ভারতের বিপক্ষে ক্রিকেটের যেকোন ফরম্যাটে একমাত্র সিরিজ জয় টাইগারদের। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম ম্যাচে মহাকাব্যিক জয়ের পর ভারতের মনোবল ভেঙে যাওয়ায় ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছে টাইগারদের।
এমনকি বাংলাদেশ দলেরও বিশ্বাস, হতাশাজনক হারের পর অনেক বেশি চাপে পড়ে গেছে ভারত।
বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেন, প্রথম ম্যাচে রোমাঞ্চকর এক উইকেটের জয় আত্মবিশ্বাসী খেলোয়াড়রা এখন জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চায় তারা।
প্রধান কোচ বলেন, তবে নিজেদের সেরা পারফরমেন্সই প্রর্দশন করতে হবে ক্রিকেটারদের। কারণ প্রথম ম্যাচের মতো আবারও কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়লে প্রতিদিনই সেটি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।
প্রথম ম্যাচে সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৮৬ রানে অলআউট হয় ভারত। ৩৬ রানে ৫ উইকেট নেন সাকিব। ১৮৭ রানের টার্গেটে অনেকেই মনে করেছিলেন, সহজেই ম্যাচ জিতবে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারের মুখে পড়ে যায় বাংলাদেশ। দল হারের মুখে পড়লেও হাল ছাড়েননি মেহেদি হাসান মিরাজ। শেষ উইকেটে মুস্তাফিজকে সাথে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে দারুন এক জয়ের স্বাদ দেন মিরাজ।
ডোমিঙ্গো বলেন, ‘এই ফরম্যাটে আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। নিজ মাঠে আমাদের রেকর্ড খুব ভালো। বিশ্বের বড় দলগুলির মধ্যে ভারতের বিপক্ষে খেলাটা সবসময়ই বাড়তি উন্মাদনা কাজ করে। তবে অন্য দিকে এটিও ঠিক যে,শক্তিশালী হয়ে ঘুড়ে দাঁড়াবে ভারত। আমাদের প্রথম ম্যাচের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। আবারও ব্যাটিংয়ে আমাদের খারাপ করলে চলবে না।’
এমন জয় বাংলাদেশের জন্য খুব বেশি প্রয়োজন ছিলো। কারণ বেশ কয়েকবার জয়ের কাছে গিয়েও হারতে হয়েছিলো টাইগারদের। বেশিরভাগ সময় ভারতের বিপক্ষেই এমনটা হয়েছিলো তাদের। এমনকি গত মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয়ের খুব কাছে গিয়েও ভারতের কাছে হারতে হয় বাংলাদেশকে। এমন অবস্থায় থেকে এর আগে ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি টাইগাররা।
অবশেষে ঐ বৃত্ত থেকে বের হতে পেরেছে বাংলাদেশ। সেই সাথে যেকোন পরিস্থিতিতেই ভারতের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেতে পারে এমন আত্মবিশ^াস অর্জন করেছে টাইগাররা।
সম্ভবত প্রথম ওয়ানডের জয়ের কম্বিনেশনই ধরে রাখবে বাংলাদেশ। যদিও ঐ ম্যাচে ব্যাটারদের ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে। অন্য দিকে প্রথম ম্যাচে মাঠের লড়াইয়ে ক্লান্ত দেখিয়েছে ভারতকে। সিরিজে টিকে থাকার জন্য একাদশে একটি বা দু’টি পরিবর্তন আনতে পারে তারা।
এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ও ভারত ৩৭বার মুখোমুখি হয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ছয়টিতে। ভারতের জয় ৩০টিতে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
বাংলাদেশ দল : লিটন দাস (অধিনায়ক), আনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, ইয়াসির আলি চৌধুরি, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, এবাদত হোসেন চৌধুরী, নাসুম আহমেদ, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, নাজমুল হোসেন শান্ত ও নুরুল হাসান সোহান।
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), লোকেশ রাহুল (সহ-অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, রজত পাতিদার, শ্রেয়াস আইয়ার, রাহুল ত্রিপাঠি, ইশান কিশান (উইকেটরক্ষক), রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, ওয়াশিংটন সুন্দর, শারদুল ঠাকুর, উমরান মালিক, মোহাম্মদ সিরাজ, দীপক চাহার ও যশ ঢুল।