সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি খুব একটা সক্রিয় নন। কিন্তু বিশ্বকাপ জেতার পর থেকে একের পর এক পোস্ট করতে দেখা গিয়েছে লিওনেল মেসিকে। বিশ্বকাপ জয় এবং তার পরের বিভিন্ন মুহূর্তের কিছু ছবি। কিছু ছবি আবার রয়েছে বিজ্ঞাপনী প্রচারের। সব মিলিয়ে ইনস্টাগ্রামের পোস্টগুলি থেকে বিরাট পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন মেসি।
বিশ্বকাপ জয়ের পর ট্রফি তোলা হাতের একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন মেসি। সেই ছবিটি দু’দিনের মধ্যে ইনস্টাগ্রামে সবচেয়ে বেশি ‘লাইক’ পায়। এখনও পর্যন্ত তাতে ‘লাইক’ করেছেন সাত কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ। এ ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার হয়ে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে প্রচার করেছেন মেসি। এই মুহূর্তে তার ৪১ কোটির বেশি ফলোয়ার রয়েছে। সেই পরিমাণ সমর্থকের কাছে পৌঁছানোর জন্য পোস্টপিছু মোটা অর্থ পান মেসি।
এক ওয়েবসাইট জানিয়েছে, প্রতি পোস্টের জন্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা করে পান মেসি। সেই অনুযায়ী বিশ্বকাপের পর থেকে করা সব পোস্ট মিলিয়ে প্রায় ৯ মিলিয়ন পাউন্ড বা ৮৮ কোটি টাকা রোজগার করেছেন মেসি। প্যারিস সেন্ট জার্মেই পিএসজি থেকে বছরে ৩০৩ কোটি টাকা আয় করেন মেসি। সেই তুলনায় শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন থেকে কয়েক দিনের মধ্যে ৮৮ কোটি টাকা আয় নেহাত কম বলা চলে না।
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই মেসির একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে মেসির যে ছবি সমাজমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল, সেটি আসল নয়, নকল! আর্জেন্টিনার এক ভাস্কর নাকি সেটি তৈরি করেছেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মকপ্রদ এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে আর্জেন্টিনার সংবাদপত্র ‘ক্লারিন’। বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি বিশ্বকাপ হাতে যে ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়েছিলেন, সেটি সাড়ে সাত কোটিরও বেশি ‘লাইক’ পেয়েছে। এখনও পর্যন্ত ইনস্টাগ্রামে লাইকের বিচারের সেটিই সর্বাধিক জনপ্রিয়। এখন জানা গিয়েছে, সেই ছবিতে মেসির হাতে ধরা ট্রফিটি নকল। কী ভাবে হল এমন ঘটনা?
ক্লারিনের দাবি, আর্জেন্টিনার সমর্থক পাওলা জুজুলিচ ওই নকল ট্রফিটি বানিয়েছেন। সংবাদপত্রে জুজুলিচ বলেছেন, “বিশ্বকাপের আগে যারা ট্রফি বানায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। ছ’মাস লেগেছে ট্রফিটা বানাতে। ইচ্ছা ছিল ওই ট্রফিতে আর্জেন্টিনার সমস্ত ফুটবলারদের সই করাব। তিন বার মাঠে ফুটবলারদের হাতে ট্রফিটা দিয়েছি। প্রথমে লিয়ান্দ্রো পারেদেসের পরিবার সেটা পায় এবং পারেদেস সই করে। যখন দ্বিতীয় বার চাওয়া হল, তখন সেটা মাঠে ৪৫ মিনিট ছিল। এক হাত থেকে আর এক হাতে ঘুরছিল। প্রত্যেকে এক বার করে ছুঁয়ে দেখছিল এবং ফুটবলাররা সই করছিল। আমাকে বাকি সমর্থকরা বলল, ‘তুমি বোধহয় কাপটা হারিয়ে ফেললে।’ তবে আমি চাইছিলাম কাপটা ফিরে পেতে। এক ফুটবলারকে চেঁচিয়ে বললাম, ‘পারেদেসের হাতে যে কাপটা রয়েছে সেটা আমার।’ পরে লাউতারো মার্তিনেস ওটা আমাকে ফেরত দিয়ে গেল।’’
ঘটনাচক্রে, সেই নকল ট্রফিটি গিয়েছিল মেসির হাতেও। তাঁকে কাঁধে তুলে সতীর্থেরা যখন নাচানাচি করছিলেন, তখন মেসির হাতে সেই ট্রফিটি ধরা ছিল। সোনার আসল ট্রফিটি ছিল অন্য এক ফুটবলারের হাতে। প্রথম ভুল ধরান আনহেল ডি মারিয়া। নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে জানান, যে ট্রফিটি তিনি ধরে আছেন সেটিই আসল ট্রফি। তিনি যেন কাউকে সেটি দিয়ে না দেন। পরে ডি মারিয়া সেটা মেসিকে জানান।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা