জুথিকা রানী ওই গ্রামের শরৎ চন্দ্রের (৪৮) স্ত্রী বলে জানা গেছে। নিহতের পরিবারের লোকজন জানায়, গত সোমবার ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার জলসার ধারাবাহিক সিরিয়াল ‘কিরণমালা’ দেখার জন্য দ্রুত রান্নার কাজ শেষ করেন জুথিকা রানী। এ সময় রাতের খাবার হিসেবে তিনি শুধু ভাত ও আলু ভর্তা করে রাখেন স্বামী-সন্তানদের জন্য।
এর পর প্রতিবেশী গণেশ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে অন্যান্য দিনের মতোই ‘কিরণমালা’ অনুষ্ঠানটি দেখতে যান তিনি। পরে তার স্বামী শরৎ চন্দ্র রায়ও সেখানে যান।
তবে বাড়িতে শুধু ভাত আর আলুর ভর্তা রান্না করায় স্ত্রী জুথিকা রানীকে প্রচন্ড গালিগালাজ করেন শরৎ চন্দ্র। শুধু তাই নয় জুথিকার বড় ছেলে লিটন চন্দ্রও তার মায়ের উপর মন খারাপ করে রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
এই অবস্থায় মঙ্গলবার বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা বাইরে গেলে জুথিকা ঘরে থাকা কীটনাশক পান করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শরৎ চন্দ্র রায় বলেন, অন্যান্য দিনের মতো গত সোমবার জুথিকা প্রতিবেশী গণেশ চন্দ্রের বাড়িতে ‘কিরণমালা’ অনুষ্ঠান দেখতে যায়। পরে সেখানে গিয়ে তাকে (জুথিকা রানী) শুধু বলেছি- ‘ঘরে ডাল-সবজি ছিল। শুধু আলু ভর্তা দিয়ে কী আর ভাত খাওয়া যায়?’
তবে রাতে বড় ছেলে তার মাকে দুই-চারটা কথা বলেছিল উল্লেখ করে শরৎ চন্দ্র বলেন, ছেলেটা অভিমান করে রাতে ভাত না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে।
কিন্তু এটুকু বিষয় নিয়ে জুথিকা রানী ঘরে থাকা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করবে তা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে বলে জানান শরৎ চন্দ্র।
কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী জানান, জুথিকার মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা জোতিষ চন্দ্র রায়ের পরিবার ও স্বামী শরৎ চন্দ্র রায়ের পরিবারের কোনো অভিযোগ নাই। তাই হাসপাতাল থেকে পরিবারে সদস্যরা তার মরদেহ স্বামীর বাড়িতেই নিয়ে যায়। পরে রাতে তার লাশ দাহ করা হয় বলে জানান তিনি।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আজমল হক বলেন, কীটনাশক পানের কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুথিকা রানীর মৃত্যু হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমান বলেন, জুথিকার অপমৃত্যু নিয়ে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ দাহ করা হয়েছে।