শ্রীপুরের মৌমিতায় ফুটেছে ছয় রঙের টিউলিপ

রফিক সরকার: গাজীপুরের শ্রীপুরে ছয় রঙের বিদেশি টিউলিপ ফুল ফুটেছে মো. দেলোয়ার হোসেনের মৌমিতা ফ্লাওয়ার্স বাগানে। এ বছর প্রথম বারের মতো বাণিজ্যিকভাবে এ বাগানের টিউলিপ বিক্রি শুরু করেছেন দেলোয়ার।

দেলোয়ারের বাগানে এখন ছয় রঙের টিউলিপের মেলা। দর্শনার্থীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে এই টিউলিপ বাগান দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন।

শীতপ্রধান দেশের এই ফুলটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে দেখাই যায় না। শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে দেলোয়ারের বাগানে এখন সে ফুলেরই ছড়াছড়ি। এ বছর তার বাগানে ফুটেছে সাদা, লাল, হলুদ, কমলা, গোলাপি ও বেগুনি রঙের রাজসিক টিউলিপ।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে, সারি সারি বেষ্টনি সেডে সাজানো ফুলগুলো দেখতে খুবই চমৎকার লাগছে। বাগানের চারপাশে ঘন জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে বাগান। এক সপ্তাহ ধরে একের পর এক ফুটতে শুরু করেছে এই ফুল।

দেলোয়ার জানান, টিউলিপ ফোটাতে তিনি উচ্চ কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। ফুলগুলো একটি শেডের নিচে চাষ হচ্ছে। আর তার চারপাশ ঢাকা রয়েছে ছোট ছিদ্রযুক্ত নেট দিয়ে। পুরো শেডটিতে বিশেষ পদ্ধতিতে তাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ করা হয় সূর্যের আলো।

তিনি জানান, এ বছর প্রথম বারের মতো টিউলিপ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়েছে। ১২ টি জাতের ৬ রঙের টিউলিপ ফুল তার বাগানে ফুটেছে। এ বছর পঞ্চগড় জেলায় ১ লাখ টিউলিপ ফুলের বাল্ক বিক্রি করা হয়েছে। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম ডিসি অফিসে ৬ হাজার, রাজশাহী জেলার এক সেনা কর্মকর্তার কাছে ৬ হাজার বাল্ক বিক্রি হয়েছে।

দেলোয়ার আরও জানান, চলতি বছর প্রথম বারের মতো বাজারে ফুল বিক্রি করা শুরু হয়েছে। প্রতিটি স্টিক ৭০/৮০ টাকা ও টপসহ ৩টি ফুল বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বলেন, ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে টিউলিপ ফুল চাষের আশা জাগছে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ। নেদারল্যান্ডস এই ফুল রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এ দেশে টিউলিপ চাষ করতে যা যা প্রয়োজন, সব ধরনের সহযোগিতা করবে কৃষি বিভাগ।

কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলাদেশে তো গরম আবহাওয়া। তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত সবকিছু মিলিয়ে এ ফুল চাষ বাংলাদেশে যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। এত প্রতিকূলতার পরও দেলোয়ার হোসেনের আন্তরিক চেষ্টায় টিউলিপ ফোটানো সম্ভব হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts