আবু নাঈম: আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জাহিদ হাসান (৪০) নামে আরও একজন মারা গেছেন। তাকে বিক্ষোভকারীরা পিটিয়ে মেরেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, জাহিদ হাসান নাটোরের বনপাড়া থেকে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসায় যোগ দিতে এসেছিলেন। তাকে পিটিয়ে মুখমণ্ডল বিকৃত করে দেওয়ার কারণে প্রথমে তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। পরে নানাভাবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এর আগে, সংঘর্ষকালে আহত আরিফুর রহমান (২৭) নামে একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। তিনি জেলা শহরের মসজিদপাড়া এলাকার ফরমান আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার জুমআর নামাজের পর আহমদিয়াদের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধসহ তদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে জেলা শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে খণ্ড খণ্ড বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদের ডাকে এই বিক্ষোভ মিছিলটি কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বড় পরিসরে চৌরঙ্গী মোড়ের দিকে আসতে থাকে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশের উপর হামলা করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে মুসল্লিরা। এ সময় পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিক্ষোভকারীরা জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর, ট্রাফিক পুলিশের অফিসে অগ্নিসংযোগ করে।
এছাড়া পঞ্চগড় বাজারে আহমদিয়াদের চারটি দোকানের মালামাল বের করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তাদের অন্তত ২০ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আহমদিয়া সম্প্রদায়।
দীর্ঘদিন ধরেই আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলো সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন। এবার পঞ্চগড়ের আহমদনগর এলাকায় ৩ মার্চ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসার আয়োজন করে। এই জলসা বন্ধ করার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধসহ ভাঙচুর ও আহমদিয়াদের বাড়িতে হামলা করে ইসলামী সংগঠনগুলোর কর্মী সমর্থকরা। শুক্রবারও বিক্ষোভ করে তারা। এরপরেই সংঘর্ষ বাঁধে।
পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সালানা জলসা বন্ধ করতে বলা হয়েছে আহমদিয়াদের। তারা জলসা থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।