মাহমুদুল হাসান মিলন: শনিবার (১১ মার্চ) চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহে আসছেন। ওইদিন বিকেলে ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আয়োজকরা।
জাতীয় নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দলীয় প্রধানের আগমনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছেন এই বিভাগের সকল আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা হবে দাবি আওয়ামী লীগ নেতাদের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে বিভাগের সর্বত্রই উৎসবের আমেজ৷ নগর জুড়ে এখন সাজসাজ রব। দলীয় প্রধানকে শুভেচ্ছা জানাতে ব্যানার-ফেস্টুন, বিলবোর্ড আর সুদৃশ্য তোরণে ছেয়ে গেছে নগরীর প্রতিটি সড়ক, সড়কদ্বীপসহ অলিগলি রাজপথ। সড়ক বিভাজকগুলো নতুন করে রং করা হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে অবস্থিত সার্কিট হাউস মাঠের আশপাশের পুরো এলাকা যেন ব্যানার, পোস্টারে ঢাকা পড়েছে।
এছাড়াও জেলার প্রতিটি প্রবেশ পথ বিশেষ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভালুকা থেকে নগরীর বাইপাস মোড় পর্যন্ত প্রায় পঁয়তাল্লিশ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশ ও মাঝখানের আইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি দিয়ে ব্যানার ও বিলবোর্ড লাগিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিকেলে সভার মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। মাঠও প্রস্তুত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচার করতে সভা মঞ্চের আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় লাগানো হয়েছে মাইক।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠের পাশে অস্থায়ী টয়লেট ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করছে। মাঠের চারপাশে ইতোমধ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নগরজুড়েও চলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর টহল।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বিভাগীয় জনসভা উপলক্ষে ময়মনসিংহে ৮টি স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই দিন ট্রেনগুলো সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০ টার মধ্যে সব স্টেশন থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
সমাবেশের প্রস্তুতির বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, ‘নৌকার আদলে সমাবেশের মঞ্চ তৈরি হয়েছে। মঞ্চের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সমাবেশের সফল করতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা চলছে। এটিকে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভায় রূপ দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছি। এ ছাড়া নেত্রীর আগমনের খবরে উচ্ছ্বসিত গোটা ময়মনসিংহবাসী।’
ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘আমাদের মাতৃতুল্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে এই অঞ্চলের সাংগঠনিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা হবে। যা আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমাদের দলকে সুসংগঠিত করা এবং বিজয়ী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী ও ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর – তারাকান্দা) আসনের এমপি শরীফ আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমনে ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিটি জেলা ও উপজেলার সকল স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। এই বিভাগীয় সমাবেশকে জনসমুদ্রে রুপান্তরিত করতে আমরা কাজ করছি। ইনশাআল্লাহ আমরা আশাবাদী সমাবেশ সফল হবে।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী যেসকল উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তার তালিকা করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ফিরতি নির্দেশনা পেলে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সমাবেশে নিরাপত্তায় প্রায় তিন হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। বাইরের জেলা থেকেও এখানে পুলিশ আসবে। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ মঞ্চের প্রথম সারিতে নিরাপত্তায় থাকবে এপিবিএন। ট্রাফিকের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের যেন কোনও ভোগান্তি না হয় সেজন্য ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’